ভেনেজুয়েলার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট উগো চাভেসের শোকমিছিলে যে বৃহত্তর বাম ঐক্যের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, শনিবার তাঁর স্মরণসভায় তা পরিণত হল মন কষাকষিতে। নজরুল মঞ্চে রাজ্য বামফ্রন্টের আয়োজিত ওই সভায় আমন্ত্রিত সিপিআই (এমএল) লিবারেশন এলেও তাদের বলতে দেওয়া হয়নি। আমন্ত্রিত দুই নকশাল নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায় এবং সন্তোষ রাণাও কিছু বলার সুযোগ পাননি। বামফ্রন্টের শরিক হয়েও বলার সুযোগ পায়নি সমাজবাদী পার্টি এবং মার্ক্সবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকও। এসইউসি-কে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা আসেনি।
ওই সভায় আমন্ত্রিত হয়েও বলতে না পেরে বামফ্রন্টের বাইরের বামপন্থীরা কিছুটা ক্ষুব্ধ। |
চাভেসের স্মরণসভায় শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
শনিবার নজরুল মঞ্চে।—নিজস্ব চিত্র |
লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ বলেন, “ওঁরা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিছু বলতে না দিলে আমরা তো আর জোর করে বলতে পারি না! সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ে ওই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমরা কিছু বললে হয়তো সিপিএম নেতাদের অস্বস্তিতে পড়তে হত!” অসীমবাবুর কথায় “আমি বলতাম, সোভিয়েতের পতনের পরে সব গেল গেল যে রব উঠেছিল, চাভেস সেখানে নতুন পথ দেখিয়েছিলেন।” ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর অবশ্য যুক্তি, ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত মিলেনা সান্তানা রামিরেজকে সন্ধ্যার বিমানেই দিল্লি ফিরতে হয়েছে বলে সভা সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে। আমন্ত্রিতদের আগে থেকেই বলা হয়েছিল, সভা সংক্ষিপ্ত হবে। ওই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বাম ঐক্যের ডাক দেওয়া সিপিআই। দলের কলকাতা জেলা সম্পাদক প্রবীর দেব বলেন, “এর পর ওঁদের ডাকলে ওঁরা বলবেন, আমাদের আর গিয়ে কী হবে!”
এ দিনের সভায় বক্তৃতা করেন ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমানবাবু, সিপিআইয়ের ভানুদেব দত্ত, আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের জয়ন্ত রায়। বুদ্ধবাবু বলেন, “চাভেস যে পথ দেখিয়েছেন, সেই পথে কি সমাজতন্ত্র আসবে? এই প্রশ্ন সারা পৃথিবী জুড়ে চলছে। আমরা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভেনেজুয়েলার দিকে তাকিয়ে থাকব।” |