দেশে ফেরা মাত্র আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হবেন। পারভেজ মুশারফকে শনিবার এমনই হুমকি দিল তালিবান। চার বছরেরও বেশি সময় স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকার পর রবিবার দুবাই থেকে পাকিস্তানে ফিরছেন প্রাক্তন পাক সেনা শাসক।
মে মাসের ১১ তারিখে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্যই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু ফেরার আগেই হুমকির মুখে পড়তে হল তাঁকে। শনিবার উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে সাংবাদিকদের কাছে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, তেহরিক-ই-তালিবানের পাক মুখপাত্র ইহসানুল্লা ইহসান জানাচ্ছেন, তালিবানের কাছে আত্মসমর্পণ না করলে ফেরা মাত্রই জঙ্গিদের লক্ষ্য হয়ে উঠবেন মুশারফ।
২০০০ সালে মুশারফকে হত্যা করার চেষ্টায় প্রধান অভিযুক্ত তালিবান রশিদ আদনান গত বছরেই ছাড়া পেয়েছে জেল থেকে। সে বলেছে, “মুশারফকে নরকে পাঠানোর জন্য এ বার বিশেষ স্কোয়াড তৈরি করছে ইসলামের মুজাহিদ্দিন।” ছ’মিনিটের এই ভিডিওটিতে ২০০৭ সালে লাল মসজিদে অতর্কিত সামরিক হানার ঘটনা উল্লেখ করে ইহসানুল্লা ও রশিদ বলে, “তোমাকে আমরা জীবন্ত ছাড়ব না মুশারফ।”
কিন্তু অন্য দিকে, প্রাক্তন সামরিক প্রধানের ফেরা উপলক্ষে বড়সড় অভ্যর্থনার আয়োজন করেছেন তাঁর অনুগামীরা। মুশারফকে স্বাগত জানাতে রবিবার বেলা এগারোটায় বিমানবন্দরে জমায়েত হওয়ার জন্য অল পাকিস্তান মুসলিম লিগের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে আজ।
দেশে পা রাখার পরেই কায়েদ-ই-আজম সমাধির কাছে একটি মিশিছলেও অংশগ্রহণ করবেন প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট।
৬৯ বছরের মুশারফের ঘরে ফেরার পথ আরও মসৃণ করতে উদ্যোগী হয়েছে বিচারবিভাগও। শুক্রবারেই বেনজির ভুট্টো, আকবর বুগতি হত্যা মামলা-সহ আরও বিভিন্ন মামলার জন্য মুশারফের আগাম জামিন ঘোষণা করেছে তিনটি পাক আদালত। ২০০৯ সালে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যাওয়ার পর থেকে অনেক বারই দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মুশারফ। শুক্রবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি জানান, “আমি দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত, কিন্তু এ বার ফেরার সময় হয়েছে। পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামিল হওয়ার সময় হয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই, তার জন্য সরকারের কাছে দরবারও করব না। দেশে ফিরলে আমি নিজেই নিজের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব।”
মুশারফের কথায় এটা স্পষ্ট যে, আগামী সাধারণ নির্বাচনে দাঁড়াবেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পাকিস্তানের জন্য এই নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর আমার ধারণা, নির্বাচনের ফলাফল অনেক রাজনৈতিক দলকেই চমকে দেবে।” |