দুই সিপিএম কর্মীকে কুপিয়ে গাড়ির তলায় ফেলে খুন করার অভিযোগকে ঘিরে ইংরেজবাজার থানার খাসিমারি এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতদের নাম অর্জুন ঘোষ (২৬) এবং পর্বত ঘোষ (৪২)। সম্পর্কে দুই জন কাকা ভাইপো। দুই জনই মালদহ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে মারা গিয়েছে। সিপিএমের অভিযোগ, “তৃণমূলের আশ্রিত দুস্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে।” তৃণমূলের পক্ষ থেকে সাফ জানানো হয়েছে, ঘটনার পিছনে কোনও রাজনীতি নেই।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা সিপিএমের কর্মী হিসাবে পরিচিত। তাঁদের বক্তব্য, “গরুতে জমির গম খেয়ে নেওয়ার জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। এর পিছনে রাজনীতি নেই।” পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “কুপিয়ে খুন ছাড়াও গাড়ি চাপার অভিযোগ রয়েছে। ময়নাতদন্তের পাশাপাশি ফরেনসিক টেস্ট করানো হচ্ছে। পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে এলাকার ফকির মন্ডলের জমিতে অর্জুন ঘোষদের গরু ঢুকে গম খেয়ে নেয়। জমিটি স্থানীয় বাসিন্দা জয়চাঁদ ঘোষের পরিবার চাষাবাদ করত। এই নিয়ে অজুর্নদের সঙ্গে জয়চাঁদ ঘোষের গোলমাল শুরু হয়। এদিন সকালে কাঞ্চনটারের বাজার সেরে একটি সাইকেলে উজ্জল ঘোষ, অর্জুন ঘোষ ও পবর্ত ঘোষ বাড়ি ফিরছিলেন। গোপালন কলোনির কাছে অভিযুক্ত জয়চাঁদ এবং দলবল নম্বর-বিহীন গাড়ি দিয়ে তাঁদের পথ আটকায়। উজ্জ্বলবাবু কোনও রকমে পালিয়ে বাঁচেন। হামলাকারীরা অর্জুন ও পবর্তকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গাড়ি দিয়ে দুই জনকে চাপা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জখম দুই জনকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়।
সিপিএম জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কৌশিক মিশ্র বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। দুই জন আমাদের কর্মী। অভিযুক্তরা সকলেই তৃণমূল কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত।” তৃণমূল জেলা সভাপতি সাবিত্রী মিত্র বলেন, “এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। পঞ্চায়েত ভোটে ফায়দা তোলার জন্য রাজনৈতির রং লাগানো হচ্ছে।” প্রত্যক্ষদর্শী উজ্জল ঘোষ বলেন, “সাইকেলে পিছনে বসেছিলাম। অর্জুন চালাচ্ছিল। পর্বত মামা সামনে ছিল। গাড়ি নিয়ে হামলা করতে আমি সাইকেল থেকে নেমে আম বাগান দিয়ে পালিয়ে বিএসএফ ক্যাম্পে আশ্রয় নিই।” |