জেলা প্রশাসনের চাপে গঙ্গারামপুরের কালদিঘির লিজ চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হল সিপিএম নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদ। পছন্দের সংস্থাকে এতকাল নামমাত্র মূল্যে ওই দিঘি লিজ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। জেলাশাসকের নির্দেশে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সম্প্রতি রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর শেষপর্যন্ত গত বুধবার লিজ বাতিল করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে জেলার ঐতিহ্যবাহী কালদিঘি লিজ নিয়ে সিপিএম পরিচালিত জেলাপরিষদের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে লিজ বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল বিরোধী কংগ্রেস এবং তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বিতর্কিত কালদিঘি লিজ বাতিলের মধ্যে দিয়ে ওই অভিযোগ সামনে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম।
জেলা পরিষদের বিরোধী সদস্য তৃণমূলের অখিল বর্মন বলেন, “অবশেষে কালদিঘি লিজ বিতর্কের অবসান হল। স্বজনপোষণের নামে সিপিএম ওই দিঘি লিজ দিয়ে প্রচুর সরকারি টাকা ক্ষতি করেছে। যা অবিলম্বে প্রশাসনিক তদন্ত হওয়া উচিত।” সিপিএমের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী বলেন, “জেলাপরিষদের আভ্যন্তরীন ব্যাপার আমি দেখি না। যা ভালো মনে হয়েছে, কর্তৃপক্ষ তাই করেছেন।” সিপিএম নেত্রী তথা সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু লিজ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “গঙ্গারামপুর গ্রামোদ্যোগ সমিতি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে কালদিঘি লিজ দেওয়া হয়। ওই সমিতি কালদিঘি এলাকায় একটি অনাথ আশ্রম চালায়। ফলে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে ধারাবাহিক ভাবে তাদের লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া আগে থেকেই চলে আসছিল। আপত্তি হওয়ায় ওই লিজ বাতিল করা হয়েছে।” বর্তমানে গঙ্গারামপুরের বিডিও ওই দিঘির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন বলে তিনি জানান। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “ভূমি সংস্কার, মৎস্য দফতর এবং জেলাপরিষদের আধিকারিককে নিয়ে গঠিত ৩ সদস্যের কমিটি তদন্তের রিপোর্ট পেয়ে প্রকৃত মূল্যে কালদিঘির লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শীঘ্রই টেন্ডারের মাধ্যমে নতুন করে কালদিঘি লিজ দেওয়া হবে।” প্রায় ৯৪ একর আয়তন বিশিষ্ট ওই জলাশয় গঙ্গারামপুরের কালদিঘি। সিপিএম পরিচালিত জেলাপরিষদ ১২ বছর ধরে তৎকালীন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে কম মূল্যে কালদিঘি লিজ দিতেন বলে তৃণমূলের অভিযোগ। তৃণমূলের সদস্য অখিলবাবুর অভিযোগ, “সরকারি জলকর অনুযায়ী কালদিঘির বছরে লিজমানি অন্তত ৩ লক্ষ টাকা হওয়া সত্ত্বেও জেলাপরিষদ পছন্দের সংস্থাকে বছরে ২৫ হাজার টাকায় লিজ দিয়ে অনিয়মে জড়িয়েছে।” গত বছর সিপিএম নেতৃত্ব লিজ মানি বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা করে। |