সিপিএমের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সই করা মৃতের সার্টিফিকেট জমা দিয়ে শ্রম দফতর থেকে বিমা ও সৎকারের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কালিয়াচক-১ নম্বর ব্লকের আলিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই মহিলা ৫৩ হাজার টাকা করে এক লক্ষ ছয় হাজার টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। গত সোমবার এক শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই অভিযোগ জানানো হয়। তদন্তের পর জেলার সহকারী শ্রম কমিশনার বুধবার কালিয়াচক থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত আনোয়ারা বিবি ও আয়েশা বিবি পালিয়ে গিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ মিলেছে। দ্রুত মামলা করা হবে।”
শ্রম দফতরের সহকারী কমিশনার দেবু কর বলেন, “বিমা ও সৎকারের টাকার জন্য সার্টিফিকেট জমা দিয়ে আবেদন করেছেন পাঁচ জন মহিলা। তদন্তে দেখা যায়, ৫ জনই জীবিত। এর আগেই দুই মহিলার টাকা তুলে নেন।” তিনি জানান, অনুদানের টাকা দেওয়ার আগে দফতরের এক ইন্সপেক্টর এলাকায় যান। ওই ইন্সপেক্টর গ্রামে সরজমিনে তদন্ত না করেই পঞ্চায়েত অফিসে বসে প্রধানের ডেথ সার্টিফিকেটের খাতা দেখে দুই মহিলা মৃত বলে রিপোর্ট দিয়েছিলেন। রিপোর্টের ভিত্তিতেই মৃত মহিলার পরিবারকে টাকা দেওয়া হয়েছে। ইন্সপেক্টরকে শোকজ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কালিয়াচক (১) বিডিও দীপ্তার্ক বসু বলেন, “পঞ্চায়েত ও শ্রম দফতরে একটি দালাল চক্র কাজ করছে। আলিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সই করা ডেথ সার্টিফিকেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর পিছনে পঞ্চায়তের লোকজন জড়িত বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। তা শেষ হতেই জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হবে। পঞ্চায়েতের এক অস্থায়ী কর্মীকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
অভিযুক্ত সিপিএম প্রধান খুশি দাশগুপ্ত বলেন, “এলাকার মানুষদের সুবিধার জন্য কয়েকটি ডেথ সার্টিফিকেট সই করে পঞ্চায়েত অফিসে রেখেছিলাম। গ্রামের কেউ মারা গেলে পঞ্চায়েতের এক অফিসার তা সরজমিনে খতিয়ে দেখে ওই শংসাপত্র দিতেন। পঞ্চায়েতের কেউ তা দিয়ে দিলে আমি কী করতে পারি।” অল ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব ট্রেড ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক ইব্রাহিম শেখ বলেছেন, “বহু নির্মাণ শ্রমিক মৃতের সার্টিফিকেট দিয়ে টাকা তুলেছে। গ্রাম পঞ্চায়েত ও শ্রম দফতরের একাংশ কর্মী টাকার বিনিময়ে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত সাজিয়ে অনুদানের টাকা পাইয়ে দিচ্ছে। জেলা শ্রম দফতরের সহকারি কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছি।” |