দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে রঘুনাথপুর ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফের শুরু হল অন্তর্বিভাগ বা ইনডোর। শুক্রবার ওই বিভাগে তিনটি শয্যার আনুষ্ঠানিক উদবোধন করেন পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন কুমার ঝরিয়াত। দীর্ঘ ১৫ বছর বন্ধ থাকার পরে ওই হাসপাতালে অন্তর্বিভাগ চালু হল। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রসূতি বিভাগের উন্নয়ন ও বন্ধ্যাকরণ শুরু করার বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর বলেও এ দিন জানান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক লিধুরাম হাঁসদা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, এই হাসপাতালে পিপিপি মডেলে সিটি স্ক্যান মেশিন বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
রঘুনাথপুর শহরে ওই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রর পরিষেবা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হলেও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ চিকিৎসক রয়েছেন তিন জন। তাঁদের মধ্যে এক জন চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত। চিকিৎসকের অপ্রতুলতা ও অন্তর্বিভাগ না থাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আগে হাসপাতালে অন্তর্বিভাগ-সহ প্রয়োজনীয় সংখ্যায় চিকিৎসক থাকলেও রঘুনাথপুরেই প্রথমে স্টেট জেনারেল (বর্তমানে মহকুমা হাসাপাতাল উন্নীত) শুরু হওয়ার পরে ক্রমশই গুরত্ব হারিয়েছিল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। ১৫ বছর আগে বন্ধ করে দেওয়া হয় অন্তর্বিভাগ। ফলে বহির্বিভাগ থেকে সামান্য চিকিৎসা পরিবষেবা পেতের রোগীরা। কিন্তু, মহকুমা হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিকঠামোগত উন্নয়নের দাবি উঠতে শুরু করে এলাকায়। ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটি’ গড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উন্নতির দাবিতে টানা আন্দোলনও করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
দায়িত্ব পেয়ে লিধুরামবাবু ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উন্নয়নে নজর দিয়েছিলেন। কার্যত তাঁর প্রচেষ্টায় তিনটি শয্যা শুরু হয়েছে। এ দিন লিধুরামাবাবু জানান, ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিলের এক লক্ষ টাকায় তিনটি শয্যা শুরু হয়েছে। ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটি’ তথা এসইউসি-র স্থানীয় নেতা প্রবীর মাহাতো বলেন “তিনটি শয্যা শুরু হওয়াকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু, লক্ষাধিক মানুষ যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল, সেখানে মাত্র তিনটি শয্যা দিয়ে প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়া অসম্ভব। শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি।”
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেই জানালেন, বছরে গড়ে যেখানে ১৫০০-২০০০ শিশুর জন্ম হাসপাতালে হওয়া দরকার, সেখানে অন্তর্বিভাগ না থাকায় দীর্ঘ সময়ে প্রসূতিরা এই হাসপাতালে আসেননি। তাঁর কথায়, “ইতিমধ্যেই হাসপাতালের সামনের জমিতে ৩০ শয্যা বিশিষ্ট ভবন নির্মানের প্রস্তাব রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে দেওয়া হয়েছে।”
|