|
|
|
|
মাসুল গুনছেন ক্যানসার রোগীরা |
|
নথিভুক্ত হয়নি নাম বদল,
বন্ধ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক
সোমা মুখোপাধ্যায় • কলকাতা |
|
হাসপাতালের নাম বদল হয়েছে এক বছর আগে। কিন্তু সেই সংক্রান্ত কোনও তথ্যই স্বাস্থ্য দফতর বা ড্রাগ কন্ট্রোলকে জানাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই ঠাকুরপুকুরের একটি বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের লাইসেন্স বাতিল করেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল। যার জেরে ভোগান্তি বাড়ছে ক্যানসার রোগীদের। রক্তের ক্যানসারের যে রোগীদের নিয়মিত রক্ত লাগে, তাঁদের অন্যত্র ছুটতে হচ্ছে। সময়মতো রক্ত না পেয়ে হয়রানও হতে হচ্ছে।
অধিকর্তা অর্ণব গুপ্ত স্বীকার করেছেন, তাঁর বাবা সরোজ গুপ্তের মৃত্যুর পরে হাসপাতালটি সরোজবাবুর নামাঙ্কিত করা হয়। কিন্তু সেটা সময়মতো স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়নি। তাই ড্রাগ কন্ট্রোল ওষুধের দোকান এবং ব্লাড ব্যাঙ্ক বন্ধের নির্দেশ দেয়। অর্ণববাবু বলেন, “দু’সপ্তাহ বন্ধ রেখে ওষুধের দোকান খোলার অনুমতি মিলেছে। ব্লাড ব্যাঙ্কটি এক মাসের বেশি বন্ধ। রোগীরা খুবই সমস্যায় পড়ছেন। বিশেষত শিশুরা।”
যে কোনও হাসপাতালের সঙ্গেই ব্লাড ব্যাঙ্ক থাকা জরুরি। ক্যানসারের ক্ষেত্রে এর প্রয়োজন আরও বেশি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এক বছর আগে নাম বদলের কিছু দিন পরে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ভবন এবং ড্রাগ কন্ট্রোলেও তা জানানো হয়। কিন্তু সেখান থেকে দমকলের ‘এনওসি’-সহ আবেদন করতে বলা হয়। দমকলে আবেদন করার পরে পরিদর্শন হয়। সার্টিফিকেট আসে গত অগস্টে। সেই অনুযায়ী ড্রাগ কন্ট্রোলে নতুন লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়। ড্রাগ কন্ট্রোল জানায়, আবেদনের ভিত্তিতে নতুন লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে। কিন্তু নতুন লাইসেন্স না পেলে ব্লাড ব্যাঙ্ক খোলা যাবে না। কারণ নাম বদলের কথা এ ক্ষেত্রে সব নিয়ম মেনে জানানো হয়নি। রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলার চিন্তামণি ঘোষ বলেন, “জেনেশুনে তো অনিয়ম চলতে দিতে পারি না। তাই ব্যবস্থা নিতেই হয়েছে।” স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, নাম বদলের অর্থ মালিকানাও বদল। তিন মাসের মধ্যে সেটা জানানোর কথা। না জানিয়ে বড়সড় নিয়ম ভেঙেছে হাসপাতাল। তার মাসুল গুনতেই হবে।
কিন্তু মাসুল তো গুনছেন রোগীরাও। চিন্তামণিবাবু বলেন, “ক্যানসার রোগীদের হয়রানির বিষয়টি আমরা জানি। সেটা বিবেচনা করেই চেষ্টা চলছে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়ার। তবে প্রক্রিয়াটা লম্বা। তাই খানিকটা সময় লাগবেই।”
মাসে ৬০০ থেকে ১০০০ জন রোগী ওই ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত নেন। বহু ক্যানসার রোগীকেই নিয়মিত রক্ত নিতে হয়। যেমন চার বছরের সোহম চৌধুরী (নাম পরিবর্তিত)। সোহমের বাবা শৈবাল চৌধুরী বলেন, “একে কঠিন রোগে আক্রান্ত ছেলের জন্য সব সময়েই উদ্বেগের মধ্যে থাকি। তার মধ্যে আবার ব্লাড ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রক্তের জন্য এক ব্যাঙ্ক থেকে অন্য ব্যাঙ্ক ঘুরতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির ফল আমরা ভুগছি।” |
|
|
|
|
|