|
|
|
|
মর্গের এসি বিকল, লাশের গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী |
দেবাশিস দাশ • কলকাতা |
একেই বলে গোদের উপর বিষ ফোঁড়া!
হাওড়া পুলিশ মর্গে এসি বিকল গত পাঁচ বছর। এর উপরে বছর দুই আগে আদালত নির্দেশ দেয়, ৩টির বেশি বেওয়ারিশ মৃতদেহ শ্মশানে নেওয়া যাবে না। অথচ প্রতিদিন ওই মর্গে বেওয়ারিশ লাশ জমছে গড়ে ৩টি। ফলে মর্গে এখন লাশের পাহাড়। অভিযোগ, দেহগুলি পচে এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা।
হাওড়া পুলিশ মর্গের চারদিকে ঘনবসতি, স্কুল, সরকারি আবাসন। সব চেয়ে সমস্যায় বনবিহারী বসু লেন, পি কে ব্যানার্জি লেন, চারুচন্দ্র সিং লেনের বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা মনোজ সিংহ বলেন, “জানলা-দরজা বন্ধ করেও পচা লাশের গন্ধ আটকানো যাচ্ছে না।”
জেলা প্রশাসন জানায়, হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের ১২টি থানা ছাড়াও হাওড়া জেলা পুলিশের কিছু থানা এলাকা থেকে ময়না-তদন্তের জন্য দেহ ওখানে আসে। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন প্রশাসনিক অবহেলার শিকার এই গুরুত্বপূর্ণ মর্গ।
এর আগে হাওড়া মর্গের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের গ্রিন বেঞ্চে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তখন গ্রিন বেঞ্চের বিচারপতিরাও মর্গ পরিদর্শনে আসেন। আদালতের নির্দেশে মর্গে এসি বসে। আবর্জনা বার করার জন্য পাতা হয় পৃথক ভূগর্ভস্থ নিকাশি পাইপলাইন। ভিসেরা সংরক্ষণের জন্য বানানো হয় একটা আলাদা ঘরও।
কিন্তু বছর পাঁচেকেই পুলিশ মর্গের সেই পুরনো ছবিটা ফিরে এসেছে। মর্গের প্রায় ২০০ মিটার দূর থেকেই আসবে বীভৎস দুর্গন্ধ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মর্গের এক কর্মী বলেন, “এসি খারাপ ৫ বছর। প্রায় ৮০-৯০টি লাশ ভিতরে পড়ে। রোজ গড়ে ৩টি লাশ জমছে।” কর্মীদের অভিযোগ, পুরসভা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় প্রায় বন্ধ মর্গের ভূগর্ভস্থ নালা। নষ্ট হয়ে গিয়েছে ভিসেরা সংরক্ষণ ব্যবস্থা। এমনকী, লাশ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাওড়া পুরসভার গাড়িও খারাপ।
সুভাষবাবু বলেন, “মর্গের এই হাল কেন, তার তদন্ত প্রয়োজন। এটা শীঘ্রই আদালতের নজরে আনব।” মর্গের ভূগর্ভস্থ নালা নিয়ে হাওড়া পুরসভার মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “ওই পাইপলাইন যে নিয়মিত পরিষ্কার হয় না তা নিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি।” মেয়র জানান, মৃতদেহ-বহনকারী নতুন গাড়ির জন্য ঠিকাদারেরা কোটেশন না দেওয়ায় গাড়ি দেওয়া যায়নি।
কিন্তু মর্গের সংস্কারের জন্য প্রশাসন কি কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে? হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সঞ্জয় বসু বলেন, “মর্গটি সংস্কারের জন্য একটা পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাতে নতুন ভবন করে আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা-সহ সব কিছুই করা হবে।” |
|
|
|
|
|