সাজগোজ...
কী পরবেন কী পরবেন না
কটা ঘরোয়া জমায়েতে বা অফিসের পার্টির আগের রাতে কত বার আলমারির সামনে গালে হাত দিয়ে বসে ভেবেছেন, কোন পোশাকটা পরলে মানানসই হওয়া যাবে? আর বাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন করতে হলে তো কথাই নেই। কাঞ্জিভরম না ঢাকাই জামদানি? ঘিচা না সিল্ক? কোনটা পরলে দেখতেও ভাল লাগবে, আর দরকার পড়লে কাজেও হাত লাগানো যাবে? সামনেই হোলি আসছে। সেই সাদা সুূতির সালোয়ার কুর্তা পরবেন এ বারও? নাকি অন্য কিছু? স্বচ্ছন্দে পার্টি-দুরস্ত হওয়ার জন্য পত্রিকার পাঠকদের টিপস দিচ্ছেন উইলস ইন্ডিয়া লাইফ স্টাইল ফ্যাশন উইকের তিন ডিজাইনার।

বিয়েবাড়ি
সিদ্ধার্থ টাইটলার: আমার কাছে প্রচুর মানুষ আসেন বিয়েবাড়িতে কীরকম পোশাক পরা উচিত, জিজ্ঞেস করতে। তাঁদের মধ্যে অনেকে আবার বলেন কনে এই রকম সাজছে। আমি চাই কনের থেকেও আমাকে যেন আরও ভাল লাগে দেখতে। এই মনোভাবটা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। এই সময় বিয়েবাড়িতে আমার মনে হয় লেমন বা অরেঞ্জ রঙের পোশাক পরলে নজর কাড়া যাবে। প্যাস্টেলও চলতে পারে। আইভরি রংটা ভারতীয়দের স্কিনের সঙ্গে বেশ মানানসই।

পায়েল প্রতাপ: ফুল হল বিয়েবাড়ির সাজের একটা বড় অঙ্গ। তবে আজকাল অনেককেই দেখি কত রকম কায়দার ফুল লাগিয়ে বিয়েবাড়িতে যান। কারও শাড়ির রং লাল, তো মাথার খোঁপায় বেগুনি রঙের অর্কিড। এটা কিন্তু একদম করা উচিত নয়। সব থেকে ভাল হল খোঁপায় আলতো করে একটা গজরা বা ভারী মালা লাগানো। আর বেশি বড় খোঁপা করার চল একদম নেই। সেটা মনে রেখেই সাজা ভাল।

পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়: মাঝবয়েসি মহিলারা টপ নট বেঁধে যাবেন না যেন। ওটা আজকালকার ফ্যাশনের সঙ্গে একদম মানায় না। অনেকে ফলস খোঁপা পরেন। তবে ওই অগোছালো দেখতে খোঁপাগুলো এড়িয়ে চলবেন। তার থেকে নিজের চুলের খোঁপা অনেক বেশি দেখতে ভাল লাগে। দরকার হলে একটু জুঁই ফুল লাগিয়ে নেবেন খোঁপাতে।

বসের বাড়ির পার্টি
সিদ্ধার্থ টাইটলার: বাড়াবাড়ি করা একেবারেই ঠিক নয়। বসের পার্টিতে আপনি নিশ্চয়ই চান না যে কেউ আপনাকে কোনও কুদৃষ্টিতে দেখুক। সেমি ফর্মাল পোশাক পরাটা সব থেকে নিরাপদ। মেয়েরা যদি ওয়েস্টার্ন পোশাক পরতে চান তো ফিটেড প্যান্ট পরুন। তার সঙ্গে বোতাম লাগানো লম্বা শার্ট। হাঁটুর সমান লম্বা ড্রেসও পরতে পারেন। ছেলেরা স্নিকার পরে যাবেন না এই সব পার্টিতে। জিনস আর ব্লেজার পরতে পারেন। তবে টাই না পরাই ভাল।

পায়েল প্রতাপ: বসের পার্টি মানে কিন্তু নিজস্বতা নষ্ট করে সাজা নয়। প্রতিটি মানুষের নিজস্ব স্টাইল রয়েছে। সেটা মাথায় রেখেই সাজা উচিত। মনে রাখতে হবে বসের পার্টিতে আপনি একটা টিমের অংশ। তাই এমন ভাবে সাজবেন না যাতে মনে হয় আপনি এক জন ফ্যাশন শো-এর শো স্টপার। অফিস থেকে সোজা পার্টিতে জেতে হলে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে সেজে যান। ফুটওয়্যারের ওপর নজর দিতে ভুলবেন না।

পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়: স্মার্ট সাজুন তবে খোলামোলা পোশাক পরবেন না। বসের বেশি নজর পড়লে পরে অসুবিধে হতে পারে। হাঁটুর তলা অবধি স্কার্ট পরুন। ব্যাকলেস ব্লাউজ না পরাই ভাল। যাঁরা এল বি ডি (ছোট কালো পোশাক) পরে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, তাঁরা সেটা পরতেই পারেন। তবে না ম্যানেজ করতে পারলে সারা পার্টিতেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। প্যান্ট-স্যুটস, বা সিগারেট প্যান্ট পরতে পারেন।

জন্মদিনের পার্টি
সিদ্ধার্থ টাইটলার: সব সময় মনে রাখবেন যে এই পার্টিগুলোতে এমন ভাবে যেন না সেজে যান যাতে আপনাকে দেখে মনে হয় খুব কষ্ট করে সাজগোজ করে এসেছেন। কেবল নিজের মতো থাকার চেষ্টা করুন। যদি কোনও ‘থিম’ থাকে তা হলে সেটা মাথায় রেখে সাজুন। আর বিশেষ করে লক্ষ রাখবেন যে, কত জন জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত। যদি বেশি লোক থাকে তা হলে একটু আড়ম্বর করে সাজুন। কম থাকলে টোন ডাউন করুন নিজেকে।

পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়: উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরুন। এটা বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যাঁদের অ্যাটিটিউড আছে, তাঁরা বেশ মজার মজার টুপিও পরতে পারেন।

হোলির পার্টি
পায়েল প্রতাপ: কোনও স্বচ্ছ জামাকাপড় পরবেন না। ভিজে গেলে দেখতে ভাল লাগে না। আর জিনস পরে হোলির পার্টিতে যাওয়া মানে মারাত্মক ভুল করা। আর দয়া করে চামড়ার চটি পরবেন না। জলে ভিজলে খুব অসুবিধে হবে।

পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়: স্বচ্ছ পোশাক তো নয়ই, কনট্রাস্ট লঁজারিও না। ক্রেপের শাড়ি পরতে পারেন। বা চিকনকারি কাজের। হোলি খেলার পরে পোশাকটা মনে করে লাইট ইয়েলো বা ম্যাঙ্গো ইয়েলো রঙে ডাই করতে দেবেন। বিভিন্ন রং মিশে ওই ডাই করার পরে দেখবেন পোশাকটা একদম নতুন লাগছে দেখতে।

প্রথম বিবাহ বার্ষিকী
সিদ্ধার্থ টাইটলার: মনে রাখতে হবে যে প্রথম অ্যানিভার্সারি মানে কিন্তু আবার বিয়ে নয়। তাই বিয়ের বেনারসি পরবেন না যেন। একটা সুন্দর চান্দেরি স্যুট সোনালি বর্ডার দেওয়া, তার সঙ্গে একটা বেশ জমকালো ওড়না নিলে ভাল লাগবে দেখতে।

পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়: অবশ্যই চন্দন পরবেন না। ভারী বেনারসি না পরলেই ভাল। তাই বলে সুতির শাড়িও না। রঙিন গরদ, তাঞ্চোই, বা কাঞ্জিভরমটা বেশ ভাল লাগে এই সব অনুষ্ঠানে। ছেলেরা ধুতি না পরে সাধারণ চুড়িদার পরুন। পশ্চিমি পোশাক পরলে ব্লেজার গায়ে দিতে পারেন।

নিজের বাড়ির পার্টি
পায়েল প্রতাপ: এমন ভাবে সাজতে হবে যাতে নিজের কোনও অসুবিধে না হয়। অতিথিদের আপ্যায়নের দায়িত্বে আপনি। তাই এমন পোশাক পরুন যা আপনি সহজেই হ্যান্ডেল করতে পারবেন। আর হিল পরবেন না। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হলে হিল পরাটা একদম কাজের কথা নয়।

পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়: নিজের বাড়িতে অনুষ্ঠান করতে হলে বেশি ঘোরাঘুরি করতে হয়, তাই এমন পোশাক পরুন যাতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। হালকা মেক আপ করুন। সিল্ক শাড়ি পরলে এমন ভাবে পরবেন যাতে তা সহজেই গা থেকে খসে পড়তে না পারে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.