ক্ষুব্ধ বাকি ভাতা প্রাপকেরা
শুধু তফসিলি জনজাতি ভাতার টাকা এল জেলায়
পাঁচ মাস পরেও বিভিন্ন ভাতা বাবদ প্রয়োজনীয় টাকা পেল না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। শুধুমাত্র তফসিলি জনজাতিদের ভাতার কিছু টাকা এসেছে। অন্য ভাতা অর্থাৎ বার্ধক্য ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা বা বিধবা ভাতার টাকা আসেনি। স্বভাবতই ক্ষুব্ধ ভাতা প্রাপকেরা। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “সরকার টাকা না দিলে ভাতা কী ভাবে দেওয়া হবে? সরকারকে জানানো হয়েছে। টাকা পেলে তবেই দেওয়া সম্ভব।”
যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ হয়েছে, তা বিলির ক্ষেত্রে জঙ্গলমহলকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। সমস্যা রয়েছে সে ক্ষেত্রেও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উপভোক্তার সংখ্যা কমে যাওয়ায় কয়েক জনকে চার মাসের টাকা দেওয়া গেলেও বেশিরভাগকেই তিন মাসের বেশি ভাতা দেওয়া যাবে না। যাঁরা তিন মাসের টাকা পাবেন স্বভাবতই তাঁরা ক্ষুব্ধ হবেন। মাঝি মাডওয়া জুয়ান গাঁওতার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর মুর্মু বলেন, “গরিব মানুষেরা ওই টাকার উপরেই নির্ভরশীল। এটা সকলেরই জানা। বারবার মাসে মাসে টাকা দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে। তবু টাকা মিলছে না।” লোধা শবর কল্যাণ সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সম্পাদক বলাই নায়েকও বলেন, “বামফ্রন্ট সরকারও যেমন এ বিষয়ে উদাসীন থেকেছে নতুন সরকারেরও এ বিষয়ে হেলদোল দেখছি না। ফলে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ গরিব মানুষ।”
জেলার প্রায় ২ লক্ষ গরিব মানুষ ভাতা পান। শেষবার ভাতা দেওয়া হয়েছিল ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে। তারপর পাঁচ মাস অতিক্রান্ত হলেও কোনও খাতেই ভাতার জন্য বরাদ্দ মেলেনি। এ বার শুধু তফসিলি উপজাতিদের ভাতার টাকা এসেছে। এ ক্ষেত্রে ৩১ হাজার ২৮২ জন প্রাপকের জন্য ১১ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। অথচ তফসিলি উপজাতি প্রাপকের সংখ্যা এখন কমে হয়েছে ২৯ হাজার ১১৫ জন। নির্দেশিকায় এই সংক্রান্ত কোনও উল্লেখই নেই। এমনকী কোন মাস থেকে কোন মাস পর্যন্ত ভাতা দেওয়া হবে তারও উল্লেখ নেই।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে দু’-তিন মাস অন্তর ভাতার টাকা আসত। তফসিলি উপজাতিদের মাসিক ভাতার পরিমাণ এক হাজার টাকা। জেলার তফসিলি ৫ মাসের টাকা প্রাপ্য। কিন্তু যে টাকা এসেছে তা দিয়ে কিছু উপভোক্তাকে ৩ মাস আবার কিছু উপভোক্তাকে ৪ মাসের বেশি টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের আর্থিক সঙ্কটের কারণেই সব ভাতার টাকা জেলায় এসে পৌঁছয়নি। সামনেই পঞ্চায়েত নিার্বচন। তাই কিছু টাকা দিয়ে আপাতত পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমেছে সরকার। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অন্য সমস্যা হবে। জেলায় বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার যে লক্ষাধিক প্রাপক রয়েছেন, তাঁদের ক্ষোভ এতে বাড়বে বই কমবে না। ভাতার সামান্য টাকার দিকেই তাকিয়ে থাকেন গ্রামের গরিব বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। এই টাকার ভরসাতেই তাঁদের সংসার চলে। দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন সংস্থান ছাড়াও চিকিৎসা বাবদ খরচের জন্যও এই টাকার উপরেই নির্ভর করতে হয় তাঁদের। বাকি ভাতা প্রাপকদেরও একই সমস্যা। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, বাকিদের টাকা এলেই তা দিয়ে দেওয়া হবে।

পাঁচ মাস মিলছে না ভাতা
বার্ধক্য ভাতা ১০২১৭৭ জন
বিধবা ভাতা ২৯৩৫০ জন
প্রতিবন্ধী ভাতা ২৮১৭ জন
প্রতি ক্ষেত্রেই ভাতার পরিমাণ মাসে ৪০০ টাকা।
প্রাপকদের অনেকেই পিছিয়ে পড়া জঙ্গলমহলের বাসিন্দা


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.