শুক্রবার দুপুরে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৯১ শতাংশ। রাস্তায় বেরিয়ে মানুষ হাঁসফাস করেছেন! আবহাওয়া দফতরের খবর, আজ শনিবার তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা আরও বাড়বে।
এই তাপপ্রবাহের মধ্যেই আই লিগে উঠে দাঁড়ানোর ম্যাচ খেলতে নামতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। দুপুর দু’টোর কাঠফাটা রোদ্দুরে। যুবভারতীর টার্ফ খারাপ, কর্তারা তাই খেলার জন্য বেছেছেন কল্যাণী স্টেডিয়াম। সকালের আড়াই-তিন ঘণ্টা বাস-জার্নির ধকল সামলে দুপুরের কাঠফাটা রোদে খেলতে নামতে হবে চিডি-পেনদের। পরিস্থিতি দেখে লাল-হলুদের কোচ মর্গ্যানের মুখে একরাশ বিরক্তি। শুক্রবার অনুশীলনের পর ক্ষুব্ধ ভাবে বলেও দিলেন, “এই গরমে খেলা সম্ভব নাকি! ফুটবলাররা তো অসুস্থ হয়ে পড়বে!” মিডিও মেহতাব বলছিলেন, “এই গরমে পুরো নব্বই মিনিট খেলাটা ফুটবলারদের কাছে যন্ত্রণার।” |
কিন্তু কে শুনবে কোচ বা ফুটবলারদের আর্তনাদ?
গরমের জন্য ক্লাবগুলোর তরফে ম্যাচের সময় বদলের আর্জি জানানো হয়েছিল ফেডারেশনের কাছে। কিন্তু কান দেননি কর্তারা। টিভি সম্প্রচারে অসুবিধার কারণে মার্চের কোনও ম্যাচ পিছোনো সম্ভব নয়, জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিট ফল, এয়ার ইন্ডিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে মাঝদুপুরের তীব্র গরমের মধ্যেই নামতে হবে মর্গ্যান বাহিনীকে। ফুটবলারদের বেশি করে জল, ইলেকট্রাল আর ফল খেতে পরামর্শ দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
শিল্ড ফাইনালে ব্যর্থ হওয়ার পর ইস্টবেঙ্গলের আই লিগে টিকে থাকার লড়াই নতুন করে শুরু হচ্ছে। পয়েন্টের বিচারে লিগ টেবিলে এগিয়ে আছে চার্চিল ব্রাদার্স। এই অবস্থায় জেতার জন্য চিডিকে সুস্থ করে মাঠে নামানোর জন্য মরিয়া ইস্টবেঙ্গল। চিডি নিজে বলছেন, “আমি নব্বই শতাংশ ফিট। যদি কোচ শুরু থেকে খেলায়, খেলব।” মর্গ্যান অবশ্য ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন টিম নিয়ে। বলেন, “চিডি আঠারো জনের দলে থাকবে।”
চিডির সঙ্গী কে তা নিয়েও সিদ্ধান্ত নেননি মর্গ্যান। ওপারার পেটের গণ্ডগোল। তিনি না খেললে বরিসিচের শুরুতে নামার কপাল খুলতে পারে। অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের শুক্রবার জন্মদিন ছিল। কোচ, অ্যালভিটোকে নিয়ে বরিসিচ গিয়েছিলেন মাদার হাউসে। রাতের খবর, উগা সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিনি খেললে চিডির সঙ্গী হবেন সম্ভবত বলজিৎ। খাবরার পায়ের পেশি শক্ত হয়ে যাওয়ায় তিনিও সমস্যায়। ব্রিটিশ কোচ অবশ্য পরিষ্কার বললেন, “আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে পাঁচটা হোম ম্যাচ জিততেই হবে। যদি হেরে যাই সেক্ষেত্রে চার্চিল পয়েন্ট নষ্ট করলেও আমাদের লাভ হবে না।” ইস্টবেঙ্গলের বড় সুবিধা, বাকি ছয় ম্যাচের পাঁচটাই খেলতে হবে ঘরের মাঠে। |
চার দিন আগেই চার্চিলের কাছে তিন গোলে হেরেছে অবনমনের আওতায় থাকা এয়ার ইন্ডিয়া। পরিকাঠামো না থাকার কারণে পরের মরসুমে আই লিগে অংশ নিতে পারবেন না বিমানকর্মীরা। তাই সামনে নতুন লক্ষ্যও নেই হেনরি, জুনিয়রদের। তা সত্ত্বেও এয়ার ইন্ডিয়াকে সমীহ করছেন মর্গ্যান। “যথেষ্ট ভাল দল। ওদের ফুটবলাররা নিজেদের স্বার্থেই সেরা খেলাটা খেলতে চাইবে।”
ফেড কাপ জিতলেও শিল্ড জিততে পারেননি। কলকাতা লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ আছে। এই তিন টুর্নামেন্টই আগে জিতেছেন। কিন্তু স্বাদ পাননি আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। ফলে লাল-হলুদ কোচের পাখির চোখ এখন আই লিগ। প্রতিটা ম্যাচই তাঁর কাছে ‘ফাইনাল’।
|