|
|
|
|
মা-বাবা সহ ছ’জনকে খুন, গণপ্রহারে হত যুবক
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
হাতে কুঠার। গ্রামের রাস্তায় দৌড়চ্ছে উন্মত্ত এক যুবক। কুঠারের ঘায়ে ততক্ষণে মারা গিয়েছেন মা। বাবাও শেষ। তাকে থামাতে যাঁরা এগিয়ে এসেছেন সকলকেই সে কুঠারের আঘাতে শেষ করে দিয়েছে। মহাভারতের চরিত্রগুলির সঙ্গে তার কোনও মিল নেই। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে গ্রামের লোকেদের কাছে জুসা ডাংগার নাম বদলে হয়ে গিয়েছে ‘পরশুরাম’। খুঁটি জেলার রনিয়ায় ছ’জনকে হত্যা করে শেষ পর্যন্ত জুসাকেও প্রাণ হারাতে হয়েছে গ্রামবাসীদের প্রহারে।
এমন ঘটনা হাল আমলে কেউ শোনেননি ঝাড়খণ্ডে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে খেতে কাজ করতে গিয়েছিল জুসা। দুপুরের পরে নেশা করে বাড়ি ফিরে সে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। বিকেলে ঘুম থেকে ওঠার পরে শুরু হয়ে যায় তার তাণ্ডব।
খুঁটির পুলিশ সুপার এম তামিলানন্দ জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই সে কুঠার হাতে চড়াও হয় বাড়ির লোকজনের উপরে। প্রথমে সে তার বৃদ্ধা মা জয়বন্তীকে নিশানা করে। কুঠারের কোপ খেয়ে লুটিয়ে পড়েন জয়বন্তী। ততক্ষণে ছেলেকে ঠেকাতে এগিয়ে এসেছেন বাবা অ্যান্টনি। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে বাবার মাথাতেও কুঠারের আঘাত হানে সে। খানিক্ষণ ছটফট করে ঘরের ভিতরেই তাঁরও মৃত্যু হয়।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, জুসাকে থামাতে যিনিই এগিয়েছেন তাঁকেই মরতে হয়েছে ওই যুবকের কুঠারের আঘাতে। নিজের ভাই সলোমন, কাকা জোহন ও ডাংগা পরিবারের দুই প্রতিবেশী সেবিয়ন ডাংগা ও বীরসী কছুয়ানকেও মরতে হয়েছে জুসার হাতে।
দু’দিন আগে, গত বুধবারই উত্তরপ্রদেশ থেকে খুঁটিতে নিজের গ্রামে এসেছিল ওই যুবক। উত্তর প্রদেশে সে শ্রমিকের কাজ করত।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, উত্তরপ্রদেশে কাজ হারিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিল ওই যুবক। তার জেরেই এই ঘটনা কি না তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। বিকেলে যখন একের পর এক লোককে কুপিয়ে চলেছে জুসা তখন গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা হাতে ওই যুবককে ধরতে দল বেঁধে তাকে ধাওয়া করেন। ইতিমধ্যেই কুঠারের আঘাতে আরও কয়েকজন আহত হন। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই গ্রামবাসীরা তাকে ছাড়তে চাননি। ধরে ফেলার পরে ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করেন গ্রামের মানুষ। গণপ্রহারের ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জুসার।
পুলিশ সুপার তামিলানন্দ জানিয়েছেন, ময়না-তদন্তের পর পুলিশের উপস্থিতিতেই দেহগুলির অন্তিম সংস্কার করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|