রাজ্যপালই বাঁচাতে পারেন সঞ্জয়কে, আশার ইঙ্গিত দিচ্ছে কেন্দ্রও
বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার প্রধান মার্কণ্ডেয় কাটজু। শুক্রবার একই কথা জানালেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার।
মার্কণ্ডেয় কাটজু কাল মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল কে শঙ্করনারায়ণকে চিঠি দিয়ে সঞ্জয় দত্তকে ক্ষমা করা ও তাঁকে মুক্তি দেওয়ার আবেদন করেছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, সংবিধানের ১৬১ ধারা অনুযায়ী রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করতে পারেন বা আদালতের শাস্তি কমাতে পারেন। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে, সঞ্জয় আবেদন করলে বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার কাটজুর কথারই প্রতিধ্বনি করে বলেন, “সঞ্জয় দত্ত কে শঙ্করনারায়ণের কাছে আবেদন করলে তিনি তাঁর বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। রাজ্যপালের ক্ষমা করার ক্ষমতা রয়েছে। তবে আমাদের এই বিষয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়।”

সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে কথা বলে তাঁর বাড়ি থেকে
বেরোচ্ছেন অভিনেতা হৃতিক রোশন। ছবি: পি টি আই
একই কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারিও। সংসদের বাইরে তিনি বলেন, “কাটজু সুপ্রিম কোর্টের এক জন বিচারপতি ছিলেন। তিনি যখন বিষয়টি নিয়ে কিছু বলছেন তখন সরকার এবং সংশ্লিষ্ট মহলের উচিত বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা।” সেই সঙ্গে তিনি সতর্ক করেছেন যে, “বিষয়টির বিভিন্ন দিক রয়েছে। আমি নিশ্চিত রাজ্য সরকার দায়িত্ব সহকারে বিষয়টি সামলাবে।” সঞ্জয় দত্ত কাটজুকে পাশে পেলেও বিজেপি এবং শিবসেনা কিন্তু তাঁকে রেয়াত করতে নারাজ। তাই কাটজু সঞ্জয় দত্তকে ক্ষমা করার আবেদন জানানোয় তাঁর তীব্র সমালোচনা করেছে দুই শিবিরই। বিজেপি সাংসদ বলবীর পুঞ্জের কটাক্ষ, “কাটজু ভুলে গিয়েছেন, তিনি আর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নন।” তাঁর কথায়, “সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান জানানো উচিত। তা না হলে দেশের মানুষের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে যে, দেশে দু’টি আইন রয়েছে।একটি বড়লোকদের, একটি গরিবদের।” শিবসেনা সাংসদ অনিল দেশাই আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, “সঞ্জয় দত্ত নিজেই বলেছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলবেন।” তাঁর সাফ প্রশ্ন, “২০ বছর আগে মুম্বই বিস্ফোরণে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাঁদের কী হবে? তাই সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে তা মেনে চলা উচিত।”
বিজেপি-শিবসেনা সঞ্জয়কে জেলে পাঠানোর দাবিতে অনড় থাকলেও এ দিন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন জয়া বচ্চন, রজনীকান্ত, অজয় দেবগণের মতো তারকারা। জয়া বচ্চন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল কে শঙ্করনারায়ণের সঙ্গে দেখা করে সঞ্জয়কে ক্ষমা করে দেওয়ার আবেদন জানাবেন। তিনি বলেন, “সঞ্জয় ইতিমধ্যেই যথেষ্ট শাস্তি পেয়েছেন। তিনি অনেক বদলেও গিয়েছেন। আমার মনে হয়, সঞ্জয়ের আর এই রকম কড়া শাস্তি পাওয়া উচিত নয়। তাই আমি ব্যক্তিগত ভাবে রাজ্যপালের কাছে তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ার আবেদন জানাব।” মুন্নাভাইয়ের শাস্তির কথা শুনে বিচলিত রজনীকান্ত এবং অজয় দেবগণও। রজনীকান্ত বলেন, “যখন থেকে শুনেছি সঞ্জয়ের মতো এক জন ভাল মানুষের শাস্তি হয়েছে, তখন থেকেই খুব বিচলিত বোধ করছি।”
বিজেপি সঞ্জয়ের শাস্তির দাবি জানালেও তাদের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা মুন্নাভাইকে ক্ষমা করার জন্য সওয়াল করেছেন। কেন দলের উল্টো কথা বলছেন শত্রুঘ্ন? সাংসদের জবাব, “কাটজুর মতো এক জন পণ্ডিত ব্যক্তি সঞ্জয়কে ক্ষমা করার আবেদন জানিয়েছেন। তাই আমিও চাই সঞ্জয় দত্তকে ক্ষমা করে দেওয়া হোক।”

বিশেষ ক্ষমতা
রাজ্যপাল কি পারেন সঞ্জয় দত্তকে ক্ষমা করতে? সংবিধানের ১৬১ নম্বর ধারায় তাঁকে সেই বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ৭২ নম্বর ধারায় রাষ্ট্রপতির যে ক্ষমা করার ক্ষমতা রয়েছে, এটা তার সমতুল্য। এই ক্ষমতা অনুসারে কোনও রাজ্যপাল তাঁর নিজের রাজ্যের কোনও দোষীর সাজা মাফ করে দিতে, কমিয়ে দিতে বা সাসপেন্ড করতে পারেন। কিন্তু সাধারণত কোনও রাজ্যপাল ফাঁসির মতো বড় শাস্তির ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা ব্যবহার করেন না। সেটা করেন শুধু রাষ্ট্রপতি। কেন? সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে হেতু ভারতে দেশের আইন আর রাজ্যের আইন আলাদা নয়, সব অপরাধই ভারত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়, তাই এমনটা হয়ে থাকে। রাজ্যপাল ছোটখাটো সাজার ক্ষেত্রে এই বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে থাকেন।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.