দোলের আগে শ্রমিকেরা বকেয়া দাবি করায় ফের মধু চা বাগান বন্ধ করে চলে গেলেন কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকালে বাগানের কারখানার গেটের সামনে শ্রমিকরা ম্যানেজারকে ঘিরে বকেয়ার দাবি জানায়। অভিযোগ, তারপরেই বাগানের ম্যানেজার-সহ অন্য অফিসারেরা বাগান ছেড়ে চলে যান। কালচিনি’র বিডিও চন্দ্রসেন খাতি বলেন, “বাগানের ম্যানেজার টেলিফোন করে জানান, শ্রমিকরা চুক্তি ছাড়া বিভিন্ন দাবি চাওয়ায় তাঁরা বাগান ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। বিষয়টি আমরা দেখছি। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।” উল্লেখ্য, গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে বকেয়ার দাবিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৫১ দিন মধু চা বাগান বন্ধ ছিল।
বাগানের ম্যানেজার অরুন শিরোহি জানান, ১৭ ফেব্রুয়ারি বাগান খোলার সময় শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে চুক্তি হয়, যে বাগান বর্তমানে রুগ্ন হওয়ায় বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। বাগানে ১০০ দিনের কাজ চলছে। সরকারের তরফে যদি ১০০ দিনের টাকা দিতে দেরি হলে সপ্তাহে ২০০ টাকা করে অগ্রিম দেবেন বাগান কর্তৃপক্ষ। আর বাগান খোলার সময় একটা রেশন দেওয়া হবে। তাছাড়া শ্রমিক সংগঠনের নেতা ছাড়া কারও সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে আলোচনা হবে না। কিছুদিন ধরে দোলের আগে বকেয়া টাকা দাবি করছিল শ্রমিকরা। এদিনের বিক্ষোভের জেরে আমাদের বাগান ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। তৃণমূল শ্রমিক নেতা অনিরূদ্ধ গোস্বামী জানান, বাগানে ৯৫০ শ্রমিক আছেন। পিএফ, গ্রাচুইটি, জীবন বিমা-সহ প্রায় ১১ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। শ্রমিকদের ৭০টি রেশন, ৬টি বেতন বাকি। বাগানটি রুগ্ন হওয়ায় ১০০ দিনের কাজ চলছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে বাগান খোলার সময় চুক্তি হয়, বাগানে প্রতি মাসে ১৪ দিন করে ১০০ দিনের কাজ ও ১২ দিন করে বাগানের কাজ হবে। ১০০ দিনের টাকা যেহেতু সময় মত আসে না। সেইজন্য বাগান কতৃপক্ষ সপ্তাহে দুশো টাকা করে অগ্রিম শ্রমিকদের দেবেন। গত ডিসেম্বর মাসের বকেয়ার দাবিতে বুধবার শ্রমিকেরা গেট মিটিং করেন। এদিন গেট মিটিং করে একই দাবি জানানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা আরএসপির নেতা মনোহর তিরকে জানান, শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হলেও বেতন দেওয়া হচ্ছে না। এদিন শ্রমিকেরা নায্য দাবি করায় কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন। প্রশাসনের উচিত এই ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করা। |