ভিনদেশের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাছের ‘লিঙ্গ’ বদল করে উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে মৎস্য দফতর। আপাতত শুধু তেলাপিয়া মাছের ‘লিঙ্গ’ বদল করার কথা ভাবা হয়েছে। দফতরের আধিকারিকদের দাবি, একটি ‘স্ত্রী’ মাছকে ‘পুরুষ’ মাছে পরিণত করলে দ্রুততার সঙ্গে তার শরীরের বৃদ্ধি হয়। তাতে, একটি তিন মাসের মাছের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম বেশি হবে। দার্জিলিং বাদে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় ওই পদ্ধতিতে তেলাপিয়া চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই ব্যপারে একটি প্রস্তাব রাজ্য মৎস্য দফতরে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন শিলিগুড়ির ডেপুটি ডিরেক্টর তিমিরবরণ মণ্ডল।
তিনি বলেন, “প্রজননের পরে হরমোন প্রয়োগ করে মাছের লিঙ্গ বদল করে দেওয়া সম্ভব। তাইল্যান্ডে ওই প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করা হয়। সে প্রযুক্তি আমাদের জানা রয়েছে। সে ব্যপারে চাষিদের প্রশিক্ষিত করা হবে। তেলাপিয়া মাছের উপরে ওই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে। তাতে, মাছের উৎপাদন অনেক বেড়ে যাবে।” তিনি জানান, ‘মনোসেক্স থেরাপিয়া’ ওই প্রযুক্তি তাইল্যান্ডে শুধু তেলাপিয়া মাছের উপরেই প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়া গলদা চিংড়ির উপরে ওই প্রযুক্তি পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হবে। মৎস্য আধিকারিকরা জানান, প্রজননের পরে একটি জলাশয়ে ওই মাছ ছাড়া হবে। তার পরে সেগুলির উপরে হরমোন প্রয়োগ করা হবে। ওই হরমোন নিয়ম মেনে প্রয়োগ করা হলে ‘স্ত্রী’ মাছ ধীরে ধীরে ‘পুরুষ’ মাছে পরিণত হবে। ওই মাছে সাধারণ তেলাপিয়ার থেকে প্রোটিন অনেক বেশি থাকবে বলে দাবি করেন ওই আধিকারিক। ফ্যাটের পরিমাণ বেশ থাকবে। ফলে মানুষের খাওয়ার পক্ষে তা অনেক বেশি উপযোগী হবে। ইতিমধ্যে আঠারখাইয়ের ভুবনজোতের এক মৎস্য চাষি সমি কেম্পি ওই পদ্ধতিতে মাছ চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি প্রশিক্ষণ নিতে তাইল্যান্ডে যাবেন বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, সাধারণ ভাবে উত্তরবঙ্গের সর্বত্র তেলাপিয়ার মাছের চাহিদা রয়েছে। অন্য মাছের তুলনায় অনেকটা কম দামে ওই মাছ বাজারে পাওয়া যাবে। কিন্ত, বাজারে তেলাপিয়া মাছের যোগান খুব সামান্য। তিমিরবরণবাবু বলেন, ‘‘ওই পদ্ধতিতে চাষ শুরু হলে তেলাপিয়ার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।” |