জোর করে জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বুদবুদ থানার সোঁয়াই গ্রামে। জমির মালিক তথা গ্রামের বাসিন্দা দুর্গাদাস মুখোপাধ্যায় পুলিশ, স্থানীয় পঞ্চায়েত, মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা, শিবশক্তি বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এই জমি তাঁরই। জাল কাগজপত্র দেখিয়ে এখন দুর্গাদাসবাবু জমির মালিকানা দাবি করছেন।
দুর্গাদাসবাবু জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এই পাঁচ বিঘা জমি তাঁদের মালিকানাধীন। এই জমিতে নিয়মিত চাষ করে আসছেন তাঁরা। কিন্তু কয়েকদিন আগে হঠাৎ করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শিবশক্তিবাবু ছাই ও বালি ফেলে জমি দখল করে নেন। দুর্গাদাসবাবু আরও জানান, তাঁর কাছে জমির পরচা, দলিল, খাজনার কাগজ সবই আছে। তিনি সে কথা শিবশক্তিবাবুকে জানালেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টে তাঁকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। |
বাধ্য হয়ে দুর্গাদাসবাবু পুলিশ থেকে শুরু করে স্থানীয় পঞ্চায়েত, মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকের কাছে তাঁর জমি বাঁচানোর আর্জি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। তিনি বলেন, “পানাগড়ে সার কারখানা গড়ার পরে এলাকায় জমির দাম বেড়ে গিয়েছে। তার উপর জাতীয় সড়কের পানাগড় বাইপাস আমাদের জমির প্রায় গা দিয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে জোর করে জমি দখল করে নিতে চাইছেন ওই তৃণমূল নেতা।”
শিবশক্তিবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি জানান, এই জমি তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি। এক সময় তাঁদের বাড়ির আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। সেই সুযোগে দুর্গাদাসবাবুর বাড়ির লোকেরা ভয় দেখিয়ে তাঁদের জমি দখল করে নেন। তিনি আরও জানান, জমির আসল দলিল তাঁর কাছে আছে। প্রয়োজন হলে তিনি তা সঠিক জায়গায় দেখাবেন। শিবশক্তিবাবু বলেন, “দুর্গাদাসবাবুদের আমাদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু সিপিএম করার সুবাদে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি আমাদের আমল দেননি। এখন রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে আমি আমাদের জমির দখল নিয়েছি।” তাঁর দাবি, দুর্গাদাসবাবুরা জমির যে কাগজপত্র দেখাচ্ছেন তা জাল। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই জাল কাগজ বানিয়েছেন তাঁরা। সিপিএম পরিচালিত স্থানীয় কোটা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়দেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, জমিটি দুর্গাদাসবাবুদেরই। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক আয়েষারানি জানান, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। |