বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়ায় ক্ষতি উত্তরবঙ্গ জুড়েই
কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। কোথাও গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বাড়ি-ঘর ভেঙে পড়ার খবরও মিলেছে দু-একটি এলাকা থেকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে মূলত ৭টা থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ার দাপট শুরু হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টিও হয়। ঝড়ের কারণে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদহের বেশ কিছু এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে যায়। শিলিগুড়ির বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি।
উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর, চোপড়ার পাশাপাশি জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। ময়নাগুড়িতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে এক গাছ ভেঙে পড়ায় যান চলাচলে সমস্যা তৈরি হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “সন্ধ্যার পর কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার খবর মিলেছে। সমস্ত ব্লকের বিডিওদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়াও বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নেওয়ার কথা জানান।
বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, এদিন সন্ধ্যার পর থেকে আকাশ অন্ধকার করে আসে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শিলিগুড়ি, ইসলামপুর, চোপড়া, ফাঁসিদেওয়া, ময়নাগুড়ি, সাপ্টিবাড়ি, চূড়াভান্ডার, দোমহনীতে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। ময়নাগুড়িতে ১৫ মিনিটের ঝড়ে সবল লন্ডভন্ড করে দেয়। কয়েক জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রায় সর্বত্র লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ময়নাগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় গাছ ভেঙে পড়েছে। ওই সময়ের মধ্যে ইটাহার, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ, আলিপুরদুয়ার, সোনাপুর, হাসিমারা, কালচিনিতে ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। ওই সব এলাকায় লোডশেডিং হয়। সাড়ে ৭টা নাগাদ ঝড়ো হাওয়া থেমে গেলে আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত ৮টা নাগাদ মালদহ, কোচবিহারে হালকা বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে।
ইসলামপুরের মহকুমাশাসক সমনজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, “কোথায় কি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। আপাতত ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, ডালখোলা, পাঞ্জিপাড়া, চোপড়াতে ঝড় হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিডিওদের অবস্থার জিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।” বিদ্যুৎ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বেশ কয়েকটি জায়গায় বিদ্যুতের ছিঁড়ে যাওয়ায় পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। রাতের মধ্যে তা স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও বীরুপাক্ষ মিত্র বলেন, “কিছুটা শিলাবৃষ্টির খবর পাওয়া গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “বৃহস্পতিবার যে ঝড় বৃষ্টি হয়েছে, সেটি এই মরসুমের প্রথম ঘুর্ণিঝড় বলা যেতে পারে। কিছুদিন ধরেই উত্তরবঙ্গে নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়। সিকিম থেকে বিস্তৃত হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত অক্ষরেখাটি গিয়েছে। তার সঙ্গে জলীয় বাস্প আসায় ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। আগামী দু’দিনেও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ঝড় বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।”
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে ঝড় শিলাবৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ থাকে। বেশি তাপমাত্রার সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাস্প থাকলেই গ্রীষ্মকালীন ঝড়বৃষ্টির পরিবেশ তৈরি হয় বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.