বাঁকুড়া জেলার অন্যতম প্রাচীন সড়কপথ অহল্যাবাঈ রোডের একাংশ সংস্কারের অভাবে এখন খানাখন্দে ভরে উঠেছে। ওই রাস্তায় পিচ উঠে গিয়েছে কবেই। এখন গর্ত সামলে যাতায়াত করতে হয় পথচারীদের।
ওন্দার কালীসেন থেকে ভাদুলঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার। এক সময় এই রাস্তা দিয়েই বিষ্ণুপুর ও বাঁকুড়া শহরের মধ্যে যাতায়াত ছিল। পরে বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক হওয়ায় এই রাস্তার গুরুত্ব কমে যায়। কিন্তু চলাচল বন্ধ হয়নি। এখনও বহু মানুষ কম দূরত্বের জন্য অহল্যাবাঈ রোডের এই অংশ দিয়ে যাতায়াত করেন। এই রাস্তার উপর রয়েছে সানতোড়, নতুনগ্রাম, গুঁইনন্দী, রামনগরের মতো বেশ কয়েকটি গ্রাম। তাঁরাও ওই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। বাসিন্দাদের আক্ষেপ, স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ-- সর্বত্রই এই রাস্তা সংস্কারের জন্য দাবি জানানো হয়েছে। রাস্তা মেরামতির আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মেলেনি। এর ফলে এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। |
সানতোড় গ্রামের বাসিন্দা স্বপন চক্রবর্তী, অনুপ রায়রা বলেন, “নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে হামেশাই আমাদের বাঁকুড়া শহরে যেতে হয়। এই রাস্তা ধরেই আমাদের এলাকার ছেলেমেয়েরা বাঁকুড়ার বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করতে যায়। তাই এই রাস্তার গুরুত্ব আমাদের কাছে কমেনি। কিন্তু জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে রাস্তাটির গুরুত্ব কমে গিয়েছে। তাই কেউ আর রাস্তাটির দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না।” সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই রাস্তা নিয়ে এলাকার রাজনীতিও সরগরম। স্থানীয় বাসিন্দা রাজেশ সামন্ত, সাধন মণ্ডলদের অভিযোগ, “রাস্তাটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিপিএম বলেছিল তারা জিতলে রাস্তাটি পিচের তৈরি করে দেওয়া হবে। অথচ কিছুই হল না। রাস্তা সেই আগের অবস্থাতেই রয়েছে।” তাঁদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তাটি পিচের তৈরি করা হোক।
রাস্তাটি যে সংস্কার করা দরকার, তা মেনে নিয়েছেন সানতোড় পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান মীরা কুণ্ডু। তিনি জানান, রাস্তাটি মেরামত না হওয়ায় সকলেই সমস্যায় পড়েছেন। তবে রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় তিনি বামফ্রন্টের দখলে থাকা জেলা পরিষদের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, “অহল্যাবাঈ রোডটি একান্ত ভাবেই মেরামত করা দরকার। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার আমি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।” বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রশান্ত দণ্ডপাট বলেন, “ওই রাস্তাটি সংস্কারের বিষয়টি আমাদের চিন্তা ভাবনার মধ্যে রয়েছে। তবে এখনই কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।” তাহলে কবে হবে? সদুত্তর নেই পাঁচ বছর ধরে জেলা পরিষদের ক্ষমতায় থাকা এই কর্মাধ্যক্ষের। |