ঘরোয়া রাজনীতিতে চাপ রয়েছে। তবু রাষ্ট্রপুঞ্জে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আমেরিকার আনা প্রস্তাবের পক্ষে শুধু ভোট দিয়েই থেমে গেল নয়াদিল্লি। কোনও ‘কঠোর’ সংশোধনী আনতে পারল না। ভোটের পরে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রতিনিধি দিলীপ সিংহ অবশ্য শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, “আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সন্তোষজনক হয়, শ্রীলঙ্কার এমন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তই করা উচিত।”
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনে গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কায় তামিল গণহত্যার তদন্ত করবে প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকার। আজ এই প্রস্তাব সমর্থন করেছে ভারত-সহ ২৪টি দেশ। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে পাকিস্তান-সহ ১৩টি দেশ। ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন আটটি দেশের সদস্য।
রাষ্ট্রপুঞ্জে গৃহীত প্রস্তাবে আদৌ খুশি নয় এডিএমকে ও ডিএমকে-সহ তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের দাবি ছিল, রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবে ‘গণহত্যা’, ‘যুদ্ধাপরাধ’-এর মতো শব্দ সংশোধনী হিসেবে ঢোকাতে হবে। কিন্তু এ দিন সে রকম কোনও সংশোধনী আনতে পারেনি ভারত।
দু’দিন আগেই ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছেন ডিএমকে প্রধান করুণানিধি। কেন্দ্রকে দু’দিন সময় দিয়ে ডিএমকে-র দাবি, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতকে কঠোর প্রস্তাব আনতে হবে। তা হলেই স্বভাবতই। আজ রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের ভূমিকায় চটেছেন ডিএমকে নেতৃত্ব। ডিএমকে নেতা তিরুচি সিভা বলেন, “শ্রীলঙ্কায় তামিল গণহত্যার বিশ্বাসযোগ্য ও আন্তর্জাতিক তদন্ত চেয়েছিলাম। দিল্লি তো সে বিষয়ে কোনও পদক্ষেপই করল না।” কালই শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে আমেরিকার তৈরি খসড়া প্রস্তাবে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে। আর এই প্রসঙ্গেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রপুঞ্জে দিলীপ সিংহের বক্তব্য। আজকের প্রস্তাবে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটি না থাকলেও দিলীপ তাঁর বক্তব্যে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটি ব্যবহার করে শ্যাম ও কূল দুই-ই রাখার চেষ্টা করেছেন। তাতে অবশ্য চিড়ে ভেজেনি। ডিএমকে-এডিএমকে-র পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করেছে সিপিআই-ও। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছে শ্রীলঙ্কা। দ্বীপরাষ্ট্রের প্রতিনিধি বলেন,“ কলম্বো এই প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করছে।” |