আবার পিছোল মুখ্যমন্ত্রীর জবাব, ক্ষুব্ধ বিরোধীরা
বিধানসভার চলতি অধিবেশনে প্রথা ভাঙা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হল। আর প্রথা ভাঙার অভিযোগের তির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই। জেলা-সফরের কারণে অধিবেশনে তাঁর অনুপস্থিতি ঘিরেই প্রথা ভাঙার অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। শাসক দলের নেতারা অবশ্য বিষয়টিকে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
এ বারের বাজেট অধিবেশেনের শুরুতেই প্রথা ভাঙা হয়েছিল। রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের ভাষণের পরে প্রথা অনুযায়ী বিতর্ক হয়নি। রাজ্যপালের ভাষণের পরেই বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তার পরে রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে গত সোমবার থেকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজে দলীয় বিধায়কদের সভায় উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিলেও নিজে জেলা সফরে বেরিয়ে পড়েছেন। বস্তুত, তাঁর জেলা সফরের কারণেই রাজ্যপালের বক্তৃতার উপরে বিতর্ক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি ভাষণের দিন পিছিয়ে দিতে হয়েছে দু’দফায়! প্রথমে কথা ছিল বুধবার হবে মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি ভাষণ। জেলা থেকে তিনি ফিরতে পারবেন না বলে ঠিক হয় আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী জবাব দেবেন। কিন্তু এ দিন বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটিতে আলোচনা করে মুখ্যমন্ত্রীর জবাব আরও এক দিন পিছনো হয়েছে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতা হবে কাল, শুক্রবার। তার মাঝে আজ হবে বিল নিয়ে আলোচনা। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কের মধ্যেই বিল পেশ করার প্রথা নেই। এ বার তা-ই হচ্ছে!
কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া এ দিন অভিযোগ করেন, “প্রথাগত নিয়মে রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্ক চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভায় থাকা উচিত। বিধানচন্দ্র রায় থেকে শুরু করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পর্যন্ত এই প্রথা চলে এসেছে। কিন্তু এ বার তার ব্যতিক্রম হয়েছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, যে কোনও বিতর্কে বিরোধী নেতার বক্তৃতা দিয়ে শুরু হয়। এ বার শাসক দলের সদস্যদের বক্তৃতা দিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই সূত্রেই কংগ্রেস বিধায়ক অজয় দে-র অভিযোগ, “এ বার মৌখিক উত্তরের জন্য তারকা চিহ্নিত প্রশ্নাবলির থেকেও প্রশ্ন বাদ পড়ছে। শান্তিপুরে প্রস্তাবিত ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অফ হ্যান্ডলুম টেকনোলজি’র জমি নিয়ে আমার প্রশ্ন ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এখন কলকাতার বাইরে বলে ওই প্রশ্নের উত্তরের জন্য তাঁর অনুমোদন পাওয়া যায়নি।” শাসক দলের এ ভাবে প্রথা ভাঙা নিয়ে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র উপযুক্ত প্রতিবাদ করছেন না বলে মানসবাবু এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সূর্যবাবুদের নীরবতা আমাদের বিস্মিত করেছে!” সূর্যবাবু বলেন, “বিধানসভায় শাসক দল কী ভাবে প্রথা ভাঙছে, নিয়ম ভাঙছে, তার প্রতিবাদ আগের অধিবেশনে করেছি। তথ্য দিয়ে আমরা পুস্তিকাও করেছি। মানসবাবুরা তখন সরকারে ছিলেন! এখনও প্রতিবাদ করছি।”
রাজ্যপালের ভাষণ-বিতর্কের সময়ে বলতে উঠে এ দিন সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমান প্রথা ভাঙার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হবে ধরে নিয়ে রাজ্যপালের ভাষণ বিতর্ক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা করা হল না। এ ভাবে প্রথা ভাঙার কোনও কারণ ছিল না। ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে একাধিক মন্ত্রী প্রতিবাদ করে আনিসুরকে থামানোর চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ আনিসুরকে থামিয়ে দিয়ে তাঁর অভিযোগ খারিজ করে দেন। তবে বিরোধীদের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী অধিবেশনে এসেছেন। আসবেনও।” মানসবাবুরা যে প্রথা ভাঙার অভিযোগ তুলেছেন, তা নিয়ে পার্থবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, “কোথায় লেখা আছে যে, অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রীকে রোজ থাকতে হবে? কংগ্রেস তো এখন এ সব কথা বলবেই! ওদের জন্যেই তো সিপিএম ৩৪ বছর রাজত্ব করেছে!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.