একশো দিনের কাজ
একে অপরকে ইস্তফার হুমকি সুব্রত-আনিসুরের
লতি বছরে একশো দিনের কাজে শ্রমদিবস সৃষ্টির পরিসংখ্যান নিয়ে চাপানউতোরের জেরে বুধবার বিধানসভায় ইস্তফার হুমকি দিলেন রাজ্যের বর্তমান ও প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রী।
বিভিন্ন জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং বাজেট বক্তৃতায় রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য বলছে, চলতি বছরে এ রাজ্যে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ১৮ কোটি শ্রমদিবস সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিন বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে রাজ্যপালের ভাষণের উপর বক্তৃতা করতে গিয়ে ওই তথ্যকে চ্যালেঞ্জ করেন প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রী আনিসুর রহমান। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটে একশো দিনের কাজ সংক্রান্ত যে তথ্য রয়েছে, তার সঙ্গে রাজ্যের দেওয়া ওই হিসাব মিলছে না। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে ওই সাইট থেকে নেওয়া প্রিন্ট আউটও দেখান আনিসুর। জঙ্গলমহলের বিভিন্ন মহকুমার উল্লেখ করে তিনি জানান, কোথাও ২৩, কোথাও ২৪, কোথাও ২২ দিন কাজ করতে পেরেছে পঞ্চায়েত দফতর।
এ কথা শুনেই প্রতিবাদে ফেটে পড়ে শাসকদল। শাসক-বিরোধী দু’পক্ষে প্রবল বাদানুবাদ শুরু হয়। স্পিকারের আসনে তখন ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ। গোলমাল শুনে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় চলে আসেন। তিনি আনিসুরের হাতের কাগজটি দেখতে চান। কিছু পরে তিনি বলেন, “আমি কাগজটি দেখলাম। ওতে হিসেব দেওয়া আছে ঠিকই। কিন্তু ২০১২-’১৩ সালের উল্লেখ থাকলেও এটি কোন মাসের রিপোর্ট, তা নেই।”
পরে স্পিকারের অনুমতিতে সুব্রতবাবু পাল্টা নথি দেখিয়ে বলেন, “গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা ১৫ কোটি ১ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি করতে পেরেছি। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ একশো দিনের কাজের প্রকল্পের জন্য আদর্শ সময়। ওই তিন মাসে আরও তিন কোটি শ্রমদিবস তৈরি করতে পারব।” সুব্রতবাবুর আরও বক্তব্য, “আমাদের রেকর্ড দেখে কেন্দ্রীয় সরকার আগামী অর্থবর্ষের জন্য এ রাজ্যের ক্ষেত্রে ১৮.৩৩ কোটি শ্রমদিবসের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। আপনাদের জমানায় ওই সময়সীমার মধ্যে তৈরি করতে পেরেছিলেন মাত্র ৮ কোটি ৫৬ লক্ষ শ্রমদিবস।” মন্ত্রী দাবি করেন, রাজ্যের দেওয়া তথ্যই ঠিক। আনিসুর বিধানসভায় তথ্যে ‘জালিয়াতি’ করছেন। রাজ্য সরকারের তথ্য ভুল প্রমাণিত হলে তিনি ইস্তফা দেবেন বলেও হুমকি দেন।
তখন আর এক প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রী এবং অধুনা বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের তথ্য প্রতি দিন ওয়েবসাইটে তুলতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটে তা-ই করা হয়ে থাকে। রাজ্য যদি ১৮ কোটি শ্রমদিবসই সৃষ্টি করে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে তারা সেই তথ্য কেন্দ্রকে দেয়নি। ফলে তা ওয়েবসাইটে ওঠেনি। সূর্যবাবুর কথায়, “এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে সুব্রতবাবু বরং এখনই পদত্যাগ করুন।” রাজ্য সরকার বিভিন্ন বিষয়ে নিজের কৃতিত্ব প্রচার করলেও কাজের কাজ কিছু করছে না বলে তাদের তুলোধোনা করেন কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীও। শাসক ও বিরোধীদের প্রবল চেঁচামেচির মধ্যে ডেপুটি স্পিকার বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সভা মুলতবি করে দেন।
পরে সুব্রতবাবু ইস্তফার হুমকিতে অনড় থেকে বিধানসভার প্রেস কর্নারে বলেন, “আনিসুর রহমান ভুল তথ্য দিয়ে বিধানসভাকে বিভ্রান্ত করেছেন। তাই আমি ওঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনব।” যা শুনে আনিসুর কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের ঠিকানা দিয়ে বলেন, ওই সাইটে ঢুকে যে কেউ তাঁর বক্তব্যের সততা যাচাই করতে পারেন। একইসঙ্গে তাঁর চ্যালেঞ্জ, “আমি তথ্য জালিয়াতি করে থাকলে সুব্রতবাবুকে আমার বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনতে হবে না। আমি নিজেই বিধায়ক পদে ইস্তফা দেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.