খেলার মাঠ দখল ঘিরে বুধবার এলাকাবাসীর সঙ্গে দুষ্কৃতীদের গোলমাল বাধল খড়দহের পাতুলিয়ায়। দুষ্কৃতীরা বোমাও ছোড়ে বলে অভিযোগ। পাড়ার লোক তাড়া করলে তারা পালায়। এক জনকে ধরে পুলিশে দেন স্থানীয়েরা। ধৃতকে জেরা করে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক হয়েছে একটি বাইক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বহুদিন ধরেই এলাকায় এক বিঘার মতো একটি জমি ফাঁকা পড়ে আছে। সেটির একাধিক মালিক। ওই জমিতে পাড়ার ছেলেরা খেলাধুলো করেন। একটি ক্লাবও তৈরি হয়েছে। ক্লাবের লোকেরাই মাঠটির দেখভাল করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ দিন দুপুরে একটি গাড়ি ও কয়েকটি মোটরবাইকে কিছু যুবক পাড়ায় আসে। অভিযোগ, সশস্ত্র ওই যুবকদের দু’এক জনের মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। মাঠে ফুটবলের গোলপোস্ট কাটতে শুরু করে তারা। পাড়ার লোক ছুটে এলে বচসা শুরু হয়। তখন দুষ্কৃতীরা বোমা ফাটায়। কয়েক জন আগ্নেয়াস্ত্র বার করে ভয় দেখায় বলেও জানান স্থানীয়েরা।
মাঠপুকুরের মতো খড়দহের ঘটনাতেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের। এ দিন বিধানসভার বাইরে তিনি বলেন, “মাঠপুকুরের পরেই খড়দহে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ঝামেলা লেগে গিয়েছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনার পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সাফ বলেন, “এর মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কিছু প্রোমোটার মাঠ দখল করতে এলে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যেরা বাধা দেন। সংঘর্ষ হয়।” তিনি জানান, পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, “ওই ক্লাবের ছেলেরা ওখানে খেলাধুলো করেন। দখলদারেরা লোকজন নিয়ে এলে ছেলেরা বাধা দেয়। এটা রাজনীতির ব্যাপার নয়। পাড়ার ছেলেরা ওই মাঠে খেলেন, তাঁরাই খেলবেন। আমরা পাড়ার ছেলেদের পক্ষে।”
এলাকাবাসীর বক্তব্য, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পাতুলিয়া পঞ্চায়েতের সদস্য প্রদীপ দাসকে দুষ্কৃতীরা কিছু বলেনি, ভয়ও দেখায়নি। বাসিন্দাদের বক্তব্য, প্রদীপবাবু আগেই সব জানতেন। তাঁরা জানান, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ওই যুবকেরা বারবার বলছিল, ‘‘আমরা থানায় বলে এসেছি। সবাই জানেন। আমাদের আদালতের কাগজও আছে।’’ বোমার আওয়াজে পাড়ার আরও লোক এলে দুষ্কৃতীরা পালায়। এক জন ধরা পড়ে।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রদীপবাবু বলেন, “কোনও দল নয়, এক প্রোমোটার গোষ্ঠী খেলার মাঠ দখল করতে এসেছিল। আমরাই পাড়া থেকে বাধা দিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “আমার কাছে অনেক দিন আগে এক দালাল এসেছিল। বারবার নিষেধ করে বলেছিলাম, ওটা খেলার জমি। মালিক কে, সেটা আগে জানান।”
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এডিসি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “ধৃতকে জেরা করে আরও পাঁচ জনের নাম পাওয়া যায়। তাদেরও গ্রেফতার করা হয়।” |