ক্ষতিপূরণ বাবদ ছাগল জুটল না চার বছরেও
বার্ড-ফ্লু রুখতে মুরগি নিধনের পরে দুঃস্থ পরিবারগুলিকে ছাগল কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রশাসন। চার বছর কেটে গেলেও সেই ছাগল পেল না দেড় হাজারেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।
২০০৯ সালে সারা দেশের পাশাপাশি এই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকাতেও বার্ড ফ্লু’র প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। সতর্কতা হিসেবে প্রাণিসম্পদ দফতরের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া-১ ব্লকের গোবিন্দনগর, ঘোষপুর, মাইশোরা ও হাউর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে মুরগি নিধন অভিযান করে রাজ্য সরকার। সেই সময়ই ক্ষতিগ্রস্ত মুরগি চাষিদের সরকারি ক্ষতিপূরণ হিসেবে ছাগল কিনে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার নির্দেশিকা দেয়। ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে সেই বাবদ বরাদ্দ হয় প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু তার পরে চার বছর কেটে গেলেও ছাগল আর কেনা হয়নি।
দেরি হচ্ছে কেন? খোঁজ নিয়ে উঠে এল তিনটি কারণ।
উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল। প্রথমে বলা হয়েছিল, যাদের মুরগি মারা হয়েছে, তাদের সকলকেই ছাগল দেওয়া হবে। পরে ঠিক হয় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে যাদের বার্ষিক আয় ৫ হাজার টাকার কম, তাদের শুধু ছাগল দেওয়া হবে। এই ডামাডোলে তালিকা তৈরিতে দেরি হয় কিছুটা।
দ্বিতীয় সমস্যা হয় নির্দেশিকা মেনে ছাগল কেনা নিয়ে। সরকারি নির্দেশিকা মেনে নির্দিষ্ট ওজনের ছাগল কেনার জন্য টেন্ডার করেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। কিন্তু তিন বার টেন্ডার করা সত্ত্বেও কোন ঠিকাদার বা সংস্থা ওই টাকায় নির্দিষ্ট ওজনের ছাগল সরবরাহে আগ্রহ প্রকাশ করেনি। ফলে জেলা পরিষদের তরফে ছাগল কেনার প্রক্রিয়া ধাক্কা খেয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ভৌমিক বলেন, “নির্দেশিকা অনুযায়ী যে ওজনের ছাগল কেনার জন্য যে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, ততটা ওজনের ছাগল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ঠিক হয়েছে, বরাদ্দ ওই টাকায় কিছুটা কম ওজনের হলেও ছাগল কিনে দেওয়া হবে। এই বিষয়ে প্রাণিসম্পদ দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।”
তৃতীয় কারণটা রাজনৈতিক। সিপিএম পরিচালিত পাঁশকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির ওই গ্রামগুলিতে ছাগল বিলি করার কাজে তৃণমূলের জেলা পরিষদ ইচ্ছা করেই গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ বামেদের।
কারণ যা-ই হোক না কেন ক্ষতিপূরণের টাকা না পেয়ে হতাশ দুঃস্থ গ্রামবাসীরা। পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতুলিয়া, তিলাগড়, বনমালীপুর, রাজনগর, চিয়াড়া, বেনাগোলেসা প্রভৃতি এলাকার প্রায় ২০টির বেশি গ্রামে ১৬৫৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত মুরগি চাষির তালিকা তৈরি করা রয়েছে। বনমালীপুর গ্রামের মুরগী চাষি কমল মুর্মু, সঞ্জয় মুর্মু বলেন, “মুরগি মারার পরে এককালীন ৫০০ টাকা করে দিয়েছিল প্রশাসন। সেই সময়ই বলা হয়েছিল ছাগল দেওয়া হবে। চার বছরেও ছাগল পেলাম না। তাই আমরা নিজেদের খরচে মুরগি চাষ শুরু করে দিয়েছি।” সিপিএম পরিচালিত পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী বলেন, “কী কারণে দেরি হচ্ছে জানি না। তবে, দুঃস্থ ওই সব পরিবারগুলি টাকা পেলে কষ্ট কিছুটা লাঘব হত।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.