স্কুল থেকে ফেরার পথে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা করে তার বাড়ির কাছেই হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল এক ব্যক্তি। এলাকার লোকজন তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। বুধবার সকালে চন্দননগরের কাঁটাপুকুর এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম নবিকুল ইসলাম। বাড়ি কালনার নাড়েঙ্গায়।
এসডিপিও (চন্দননগর) সৈকত ঘোষ জানিয়েছেন, অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে নবিকুলকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সে কোনও অপহরণ চক্রে জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মনে হয়, ছাত্রীটির বাড়ির রাস্তা নবিকুল চিনত না। তাই তাকে সহজে ধরা গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুভাষ পল্লির পূর্বপাড়ার বাসিন্দা সন্তোষ পালোয়ানের ছ’বছরের মেয়ে ইসরিয়া নাড়ুয়া শিক্ষা নিকেতনে পড়ে। স্কুলটি তার বাড়ির কাছেই। প্রতিদিন একাই যাতায়াত করে। এ দিন সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুল ছুটির পরে সে বেরোতেই বছর পঁয়তাল্লিশের নবিকুল তার পিছু নেয়। কিছুটা এগোতেই ইসরিয়ার হাত ধরে তার বাড়ির পথে এগোয় নবিকুল। |
কিন্তু পূর্বপাড়ায় ঢোকার পরে বাড়ি ছাড়িয়ে এগিয়ে যেতেই ইসরিয়া চিৎকার করে ওঠে। সন্দেহ হওয়ায় চিৎকার করে ওঠেন স্থানীয় এক চা-দোকানিও। ইসরিয়াকে নিয়ে এ বার নবিকুল দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। কিন্তু এলাকার লোকজন ধাওয়া করে পাশেই কাঁটাপুকুরের রেললাইনের কাছে নবিকুলকে ধরে ফেলেন। এলাকায় তাকে ফিরিয়ে এনে শুরু হয় মার। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
ইসরিয়া বলে, “আমি স্কুল থেকে বেরোতেই ওই লোকটা আমার পিছু নেয়। আমি লোকটাকে চিনি না। কিন্তু একটু এগোতেই বলল, আমাকে বাড়িতে পৌঁছে দেবে। তাই আমি চলে আসি।” ইসরিয়ার বাবা সন্তোষবাবু ডেকরেটরের দোকানে কাজ করেন। তিনি বলেন, “মেয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই স্কুলে একা যাতায়াত করছে। আমি গরিব মানুষ। আমার মেয়েকে কেন অপহরণ করা হচ্ছিল, কিছুই বুঝতে পারছি না।” সন্তোষবাবুই পরে পুলিশের কাছে নবিকুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, পূর্বপাড়ার চা-দোকানি গণেশ বিশ্বাস বলেন, “দোকানদারি করতে করতে হঠাৎ দেখি মেয়েটা অচেনা লোকের সঙ্গে যাচ্ছে। সন্দেহ হয়। মেয়েটা অল্পের জন্য উদ্ধার হল।” বাবলু পণ্ডিত নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা ঠিক সময়ে না পৌঁছলে মেয়েটিকে নিয়ে লোকটা পালিতে যেত।” এলাকার লোকজনের দাবি, মারধরের সময়ে নবিকুল কবুল করেছে, তার দলে আরও পাঁচ জন ছিল। তারা স্টেশনে অপেক্ষা করছিল। |