জনতা ইটপাটকেল ছুড়ছে। লাঠি দিয়ে বেদম পেটাচ্ছে পুলিশকে। পাল্টা লাঠি চালাচ্ছে পুলিশও। বুধবার রাতে এই লড়াই দেখল হাওড়ার মল্লিকফটক এলাকা। আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত র্যাফ নামানো হয়।
একটি বহুতলের উপরে বেআইনি ভাবে আরও একটি তলা নির্মাণে পুলিশ বাধা দেওয়ায় ওই এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশি সূত্রের খবর, ছ’মাস আগেও মল্লিকফটক এলাকার পি কে ব্যানার্জি রোডে ওই চারতলা বাড়ির উপরে অবৈধ ভাবে পাঁচতলা তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। ওই নির্মাণ বেআইনি বলে জানিয়ে হাওড়া পুরসভা সে-বার সেটি ভেঙেও দেয়। বুধবার রাতের অন্ধকারে ফের পাঁচতলার নির্মাণকাজ শুরু হয়। বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। নির্মাণ আটকাতে রাত ১০টা নাগাদ হাওড়া থানার পুলিশ সেখানে যায়।
পুলিশ জানায়, নির্মাণকাজ রুখে ওই বাড়ির প্রোমোটার সুদাম চৌধুরীকে গ্রেফতার করার উদ্যোগ চলছিল। সেই সময় সুদামের লোকজন পুলিশকে আক্রমণ করে। খবর পেয়ে তত ক্ষণে ঘটনাস্থলে চলে এসেছেন স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর শ্বেতা সিংহ এবং তাঁর ভাই রকি ও সমর্থকেরা। অভিযোগ, পুলিশ সুদামকে গ্রেফতার করতে গেলে শ্বেতাদেবী বাধা দেন। পুলিশের অভিযোগ, রকি ও তার দলবল লাঠি নিয়ে পুলিশকে মারতে শুরু করে। পুলিশের দিকে ইটপাথর ছোড়ে কাউন্সিলর ও প্রোমোটারের লোকজন। ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়। অবশেষে র্যাফ নামানো হয়।
পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর বলেন, “আমি শুধু জানতে চেয়েছিলাম, গ্রেফতার করা হচ্ছে কেন। কিন্তু কোনও উত্তর না-দিয়ে পুলিশ আমাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়। মহিলা
পুলিশ দিয়েও হেনস্থা করে।” প্রোমোটার ও সমর্থকদের নিয়ে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শ্বেতাদেবী। পুলিশও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। গভীর রাত পর্যন্ত উত্তেজনা ছিল। প্রোমোটারকে গ্রেফতার করা যায়নি।
ধৃত ১: রেলে চাকরি দেওয়ার নামে ১৬ কোটি টাকা প্রতারণার ঘটনায় বুধবার রাতেই আরও এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সালকিয়ার বাসিন্দা ওই যুবকের নাম কিশোর সিংহ। প্রতারণার অভিযোগে ১২ মার্চ রাতে সন্দীপ শর্মা নামে বিহারের এক বাসিন্দাকে হাওড়ার জি আর রোড থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পরেই জানা যায়, ওই ঘটনার পিছনে রয়েছে বড়সড় আন্তঃরাজ্য প্রতারণা চক্র। সেই চক্রে আছে কিশোরও। তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, শিবপুরের একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ নিয়েছে ওই যুবক। এ দিন শিবপুরের রামমোহন মুখার্জি লেনের সেই দোকান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দোকান থেকে রেলের চাকরির ফর্ম, রেলের পরিচয়পত্র এবং বেশ কিছু হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছেন গোয়েন্দারা।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু: পশ্চিম বন্দর এলাকায় বুধবার দু’টি ভিন্ন ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। সকাল ৮টা নাগাদ সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডে গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে এক সাইকেল আরোহী প্রাণ হারান। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম শিউপূজন ঠাকুর (৪৫)। দু’নম্বর গোডাউন গেটের কাছে
গাড়িটি তাঁকে ধাক্কা মারে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এ দিনই পোর্ট ট্রাস্টের একটি জলের ট্যাঙ্কে পড়ে সুনীলকুমার সিংহ (২০) নামে এক তরুণ মারা যান। তিনি নেতাজি সুভাষ ডকের শ্রমিক ছিলেন। |