|
|
|
|
বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, গারো পাহাড় আঁধারে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
সতেরো বছর আগের অন্ধকার যুগ ফিরে এসেছে গারো পাহাড়ে। আক্ষরিক অর্থেই। কখনও ১২ ঘণ্টা, কখনও ২৪, কখনও বা ৪৮ বা তারও বেশি সময় ধরে নাগাড়ে বিদ্যুৎ থাকছে না মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের জেলাগুলিতে।
বার্ষিক পরীক্ষার আগের দিন, গত কাল সন্ধ্যা ছ’টা থেকে সমগ্র গারো পাহাড় অন্ধকার হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টাতেও বিদ্যুৎ সংযোগ না আসায় ধৈর্য্য হারা মানুষ রাস্তায় ভাঙচুর শুরু করে। উইলিয়াম নগরে দলে দলে মানুষ অন্ধকার পথে নেমে বিদ্যুৎ পর্ষদের দফতরের উদ্দেশে অভিযান চালান। শুরু হয় দফতর ভাঙচুর। কন্ট্রোল রুম বিধ্বস্ত হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে বিরাট পুলিশবাহিনী ও আধা-সেনা তলব করতে হয়। গারো পাহাড়ের সব বিদ্যুৎ দফতরেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ রাতভর আসেনি। তাই, তুরায় পর্ষদের সদর দফতর ঘিরে এখন রীতিমতো দূর্গসদৃশ নিরাপত্তা।
গত সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার গারো পাহাড়ের সব জেলা বিদ্যুৎহীন ছিল। সেই ক্ষোভ প্রশমিত হওয়ার আগেই ফের এমন কাণ্ড। কিন্তু কেন বারবার এমনটা হচ্ছে? মেঘালয় বিদ্যুৎ পর্ষদের (এমইসিএল) কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, নাঙালবিবরা লাইন ধরেই গারো পাহাড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সেখানে, পশ্চিম গারো হিলের নোংস্টেইন থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে কোথাও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ফলে পুরো সরবরাহ লাইন ‘ফল্টি’ ঘোষণা করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতির ধাক্কায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে ১৯৯৫-৯৬ সালের স্মৃতি ফিরে এসেছে। সেই সময় নাগাড়ে কয়েকদিন ধরে গারো পাহাড়ে বিদ্যুৎ থাকত না।
কিন্তু ভি এস জাফ্ফা রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের ভার নেওয়ার পরে, কর্মীদের নির্দেশ দেন পাহাড়, জঙ্গলের মধ্য দিয়ে আসা পুরো লাইনে সর্বক্ষণ নজরদারি রাখতে হবে। নিয়মিত লাইন পরীক্ষা করতে হবে। সে সময় বিদ্যুৎ কর্মীরা দিনের পর দিন পাহাড়ে চড়ে, জলে সাঁতরে, জঙ্গল পেরিয়ে লাইন সারিয়েছিলেন। কেবল সমস্যা দেখা দিলেই নয়, নিয়ম করে এই পরিদর্শনের কাজ করার নির্দেশ ছিল। তার ফলে গত দেড় দশক গারো পাহাড়ে বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে সমস্যা হয়নি।
কিন্তু বদলেছে কর্তা, কর্মীদের অভ্যাসও। এখন সমস্যা হলে তখনই দুর্গম এলাকায় লাইন পরীক্ষায় লোক পাঠানো হয়। এমইসিএল মুখপাত্র জানিয়েছে, নোংস্টেইন এলাকায় বেশ কিছু দুর্গম পাহাড়-জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুতের তার টানা হয়েছে। সমস্যা কোথায় তা খুঁজে বের না করা অবধি বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হবে না বলে এমইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান। ‘ফল্ট’ খোঁজার চেষ্টা চলছে। |
|
|
|
|
|