|
|
|
|
সেনা-চর সন্দেহে কাশ্মীরে খুন একাদশের ছাত্র |
সাবির ইবন ইউসুফ • শ্রীনগর |
রাতের খাওয়া সারার সময় একটি ফোন পেয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়েছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্রটি। কিছু ক্ষণ পরেই তার বাবার কাছে ফোন আসে। মসজিদের কাছে পড়ে রয়েছে ছেলের রক্তাক্ত মৃতদেহ। কেউ গুলিতে ঝাঁঝরা করেছে ১৮ বছরের সুহেল আহমদ সোফিকে।
মঙ্গলবার রাতে উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা জেলার সোপোর এলাকার এই ঘটনার দায় কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এখনও পর্যন্ত স্বীকার করেনি। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, লস্কর-ই-তইবাই হামলা চালিয়েছে। সুহেলকে নিরাপত্তাবাহিনীর গুপ্তচর বলে সন্দেহ করেছিল তারা।
|
সুহেল আহমদ সোফি |
সোপোরের পুলিশ সুপার সইদ ইমতিয়াজ হুসেন বুধবার জানিয়েছেন, সে রাতে সুহেলকে শেষ দেখা যায় আর একটি ছেলের সঙ্গে স্থানীয় মসজিদের বাইরের মাঠে বসে কথা বলতে। সে সময় মসজিদে একটি জমায়েত চলছিল। হঠাৎই জঙ্গিরা এসে সুহেলকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। কোনও ভাবে সেই গুলিটি এড়িয়ে গিয়ে মসজিদের ভিতর দৌড়ে পালায় সুহেল। লুকিয়ে পড়ে ফায়ার প্লেসের ভিতরে। কিন্তু এক জন জঙ্গি তাকে তাড়া করে মসজিদের ভিতরে ঢুকে পড়ে। পর পর পাঁচটি গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুহেলের।
ঘটনার পর থেকেই শোকের আবহ সোপোরের দোয়াবগাও এলাকার কুন্দরি মহল্লায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অত্যন্ত গরিব পরিবারের ছেলে ছিল সুহেল। তার বাবা গোলাম নবি সোফি খুব কষ্ট করে রোজকার অন্নসংস্থান করতেন।
ভাল খেলোয়াড় বলে এলাকায় সুপরিচিত ছিল সুহেল। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করত সে। খেলাধুলোর মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে যুব সম্প্রদায়কে দূরে সরিয়ে রাখার ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী ছিল সুহেল। এ সমস্ত কারণেই হয়তো সে জঙ্গিদের লক্ষ্য হয়ে উঠেছিল বলে অনেকের অনুমান।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধান মুফতি বশিরুদ্দিন আহমদও। বলেছেন, “মসজিদকে মৃত্যুক্ষেত্র বানিয়ে তোলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। নিরীহ ব্যক্তিকে মেরে ফেলার অর্থ মনুষ্যত্বকে খুন করা।”
ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও। তিনি এ দিন টুইট করেন, “যারা মর্জিমাফিক বিক্ষোভ দেখান, সেই ভণ্ডেরা এখন কোথায়? মসজিদের ভিতরে ঢুকে একটি ১৮ বছরের ছেলেকে গুলি করেছে জঙ্গিরা।” ওমরের বক্তব্য, “নিরাপত্তারক্ষীদের আধিক্য নিয়ে মানুষের কোপের মুখে পড়তে আমি রাজি। কিন্তু তাঁদের কথাই শুনব, যাঁরা সত্যিকারের মানুষ মারার বিরোধী।”
গত সপ্তাহে নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে এক যুবক নিহত হওয়ায় সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁর এই মন্তব্য। |
|
|
|
|
|