|
|
|
|
আলগিরির ডানা ছাঁটলেন স্ট্যালিন |
সমর্থন তোলার পিছনে সেই গৃহবিবাদের ছায়া |
অনমিত্র সেনগুপ্ত • নয়াদিল্লি |
শ্রীলঙ্কায় তামিল হত্যার প্রতিবাদে তাঁরা ইউপিএ ছেড়েছেন এমনটাই দাবি ডিএমকে নেতৃত্বের। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তের পিছনে করুণানিধির গৃহবিবাদের ছায়া অনেকটাই স্পষ্ট।
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের প্রথম দিন থেকেই তিন স্ত্রীর চার ছেলে আর দুই মেয়েকে নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন করুণানিধি। তখন কে কেন্দ্রে মন্ত্রী হবেন, আর কে রাজ্যের দায়িত্ব পাবেন, তা নিয়ে রীতিমতো গৃহযুদ্ধ লেগে গিয়েছিল। সে যাত্রায় বড় ছেলে আলাগিরিকে কেন্দ্রে পাঠিয়ে মেজ ছেলে স্ট্যালিনকে রাজ্যের দায়িত্ব দিয়েছিলেন করুণানিধি। আলাগিরি কেন্দ্রে মন্ত্রী হওয়ার পরের দিনই স্ট্যালিনকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে ঘোষণাও করে দিয়েছিলেন। তা নিয়ে বিবাদ কম হয়নি করুণানিধির সংসারে।
গত চার বছরে দলের উপরে নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই বাড়িয়েছেন স্ট্যালিন। কিন্তু সেটা নিরঙ্কুশ করার ক্ষেত্রে বড় বাধা আলাগিরি। তামিল ভাবাবেগকে সামনে রেখে বাবাকে চাপ দিয়ে সেই কাজটাই স্ট্যালিন সেরে ফেললেন বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে আনলেন আলাগিরিকে। ডিএমকে সূত্রের খবর, সমর্থন প্রত্যাহারের ব্যাপারে আলাগিরির সঙ্গে কোনও আলোচনাই করা হয়নি। যা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে উষ্মাও প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রসায়নমন্ত্রী। আজ দুপুরে দলের পাঁচ মন্ত্রীর মধ্যে তিন জন যখন ইস্তফা দেন, তখন সেই দলে আলাগিরি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ডি নেপোলিয়ন ছিলেন না। বিকেলের পরে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে তাঁরা পদত্যাগপত্র জমা দেন। বাবাকে বার্তা দিতেই আলাগিরি এই দেরিটা করলেন বলে ডিএমকে-র একাংশের মত। তবে ডিএমকে-র অন্য একটি অংশ বলছে, তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন যা, তাতে সমর্থন প্রত্যাহার করা ছাড়া উপায়ও ছিল না। জয়ললিতার কাছে বিধানসভা নির্বাচনে পরাস্ত হওয়ার পর থেকেই রাজ্যে দলের হাল ক্রমশ খারাপ হয়েছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে স্ট্যালিনের নেতৃত্বও। সেই সঙ্গে কেন্দ্রে সরকারে থাকার ফলে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার শরিকও হতে হচ্ছিল ডিএমকে-কে। যার জেরে আরও আলগা হচ্ছিল পায়ের তলার মাটি। এই অবস্থায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে পরের লোকসভা ভোটে গেলে হাতে থাকা ১৮টি আসনের অনেকগুলিতেই জেতা যাবে না বলে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিল দলে।
সেই কারণেই তামিল ভাবাবেগ উস্কে দিয়ে হারানো জমি ফিরে পেতে আসরে নামল ডিএমকে। আপাতত দলের লক্ষ্য হল, লোকসভা ভোটে অন্তত দশটি আসন জেতা। যাতে সরকার গঠনের সময় দর কষাকষি করা যায়। তবে, ডিএমকে-র গলার কাঁটা হয়ে রয়েছেন করুণানিধি-কন্যা কানিমোজি। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ।
টুজি কেলেঙ্কারিতে ডিএমকে-র সমর্থনপুষ্ট টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে নতুন তথ্য পাওয়ায় ওই তদন্ত শুরু হয়েছে। এ বার করুণানিধিকে চাপে রাখতে সেই তদন্ত আরও জোরদার হবে বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব। তাই ডিএমকে-র একাংশ মনমোহন সরকারকে মুলায়মের মতো বাইরে থেকে বিষয়ভিত্তিক সমর্থন দেওয়ার পক্ষে।
আর মেয়েকে স্বস্তিতে রাখতে করুণানিধি সেই পথে হাঁটতে পারেন বলেই অনেকের মত। |
|
|
|
|
|