আক্রমণেও অনেক মত, দিশা পাচ্ছে না বিজেপি
স্থির সরকারে দুর্বল কংগ্রেসকে ঘা দিতে আসরে তো নেমেছে, কিন্তু এগোবে কোন পথে তা নিয়েই ঘোর সমস্যায় বিজেপি।
দলের নেতারা অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা বলছেন বটে, তাতে যে সরকারের পতন ঘটবেই তার নিশ্চয়তা নেই। মায়া-মুলায়মের দু’ নৌকোয় পা রেখে এর আগেও উতরে গিয়েছে কংগ্রেসের সরকার। দলের সভাপতি রাজনাথ সিংহ তাই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এর কোনও প্রয়োজন নেই আপাতত। তবে কি মুলায়ম সিংহ যাদবের পক্ষ নেবে দল? ডিএমকে সরে যাওয়ার পরে সরকার টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে নিজেদের ওজন বেড়ে যাওয়ায়, কংগ্রেসকে কম নাস্তানাবুদ করছেন না সমাজবাদী পার্টির সভাপতি। এমনকী তাঁর পক্ষ নিতে বলছেন সুষমা স্বরাজকেও। লোকসভার বিরোধী দলনেত্রীও তা-ই চান। কিন্তু রাজ্যসভা বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলির আবার সায় নেই এতে। তাঁর বক্তব্য, মুলায়ম কখনওই বিজেপি শিবিরে ভিড়বেন না।
ফলে দলের নেতারা ভালই বুঝতে পারছেন বর্তমান অস্থিরতার মধ্যে কংগ্রেসকে আরও দুর্বল করে ফেলার জন্য জোরালো আঘাত হানা দরকার। কিন্তু কী ভাবে তা করা যাবে, সেটা নিয়েই একমত হতে পারছে না নানা-মুনির দল। দলের নেতারাই মানছেন, অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় সিদ্ধান্ত আসত উপর থেকে, দল তা মেনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করত। এখন নেতৃত্বের সেই কর্তৃত্বই নেই। দু’মাস হয়ে গেল দলের কাণ্ডারী হয়েছেন রাজনাথ সিংহ। কিন্তু আজও নিজের টিমই ঘোষণা করে উঠতে পারেননি। লালকৃষ্ণ আডবাণী বা নরেন্দ্র মোদী, কারও কথাই দলে শেষ কথা নয়। প্রত্যেকেরই কিছু সমর্থন এবং বিরোধিতা রয়েছে দলে। ফলে একজোট হয়ে কংগ্রেসকে ঘা দেওয়ার সাধ থাকলেও এই মুহূর্তে সেই সাধ্য নেই ছত্রভঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের।
কংগ্রেস বেকায়দায় পড়লেও নেতৃত্ব নিয়ে এই ধরনের কোনও সঙ্কট নেই তাদের। কিন্তু বিজেপিতে লড়াই নানামুখী। সংসদীয় নেতাদের মধ্যে লড়াই, দলের সঙ্গে নাগপুরের লড়াই। মোদীর জনপ্রিয়তা থাকলেও তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী করা নিয়ে দলের মধ্যে কোন্দল চলছেই। দলে নিজেদের গুরুত্ব নিয়ে অন্তহীন কলহের মধ্যেই রণকৌশল স্থির করতে আডবাণী, সুষমা, জেটলিরা দীর্ঘ বৈঠক করেন। দেখা যায়, দলের একটি অংশ এখনই নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুলায়ম সিংহের মতো অনেকেই যাঁরা দ্রুত নির্বাচন চান, তাঁদের অনেককেই এই প্রশ্নে পাশে পেতে পারে বিজেপি। আজ নয়তো কাল ভোট তো হবেই। মুলায়ম ও মায়াবতীর মধ্যে এক জন সমর্থন তুললেই তো খেলা শেষ! এই অবস্থায়ও দলের সিংহভাগ সাংসদই চান না, নির্বাচন তাড়াতাড়ি হোক। বরং যত দিন সরকার চলবে, কংগ্রেস বিরোধিতার হাওয়াও আরও তীব্র হবে। তা থেকেই লোকসভা ভোটে ফায়দা তুলতে পারবে বিজেপি। এরই মধ্যে রাজনাথ জানিয়ে দেন অনাস্থা প্রস্তাব প্রয়োজন নেই।
মুলায়মের বিরুদ্ধে বেণীর বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দলের অবস্থান কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে একমত হতে পারছে না দল। সুষমার মতে, সনিয়া গাঁধী আজ যখন হাতজোড় করে মুলায়মের কাছে ক্ষমা চাইছেন, আর বিরোধী দলনেত্রী হিসাবে সুষমাকে তাঁর পক্ষ নিতে বলছেন, সেই পরিস্থিতিতে বিজেপি সপা-প্রধানের পক্ষ নিলে ক্ষতি কী? বিজেপি হয়তো তাদের সমর্থন পাবে না, কিন্তু মুলায়ম বিজেপি-র শরণাপন্ন হচ্ছেন, এ কথা প্রচার করে সপা-র ভাবমূর্তিতে তো আঁচ ফেলা সম্ভব হবে।
বেণীকে প্রচ্ছন্ন সমর্থন করে বরং উত্তরপ্রদেশের কুর্মি ভোটের সহানুভূতি আদায় করার চেষ্টা করা যেত। নীতীশকুমারও কুর্মি ভোট এ ভাবে এনডিএ-র ঝুলিতে টানছেন। বিজেপি-র এক নেতার মন্তব্য, “কংগ্রেস যত দুর্বল হচ্ছে, বিজেপি ভাবছে কংগ্রেস-বিরোধী হাওয়ার ভোট বিজেপি-র ঝুলিতে যাবে। কিন্তু তার জন্য যে নেতৃত্বকে একজোট হতে হবে, সংগঠিত করতে হবে দলটাকে, সেটা যে কবে হবে জানা নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.