এক দিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অন্য দিকে আর্থিক ক্ষেত্রে প্রভূত সংশয়। এই দুইয়ের জাঁতাকলে টানা পড়ছে বাজার। সূচক ফের নেমেছে ১৮ হাজারের ঘরে।
বুধবারও সেনসেক্স পড়েছে ১২৩.৯১ পয়েন্ট। এই নিয়ে গত চার দিনে তার মোট পতন ৬৮৬.২৫। এ দিন বাজার বন্ধের সময়ে সূচক থামে ১৮,৮৮৪.১৯ অঙ্কে।
তবে এরই মধ্যে কিছুটা রুপোলি রেখা দেখিয়েছে শেয়ার বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের এক সমীক্ষা। যেখানে বলা হয়েছে, এই অর্থবর্ষেই ভারতের শেয়ার বাজার গড়বে উত্থানের নয়া রেকর্ড। জুনের মধ্যেই সেনসেক্স পৌঁছবে ২০,৫০০ অঙ্কে। অর্থবর্ষের শেষে ছুঁয়ে ফেলবে ২১,৮০০। আর তা সম্ভব হবে ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নরম মনোভাব ও আর্থিক সংস্কার নিয়ে কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ফলেই। প্রসঙ্গত, আর্থিক সংস্কার জোরকদমে চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার এ দিনও করেছেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
তবে এখনকার ছবিটা বেশ অনিশ্চিত। কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারের শরিক ডিএমকে সমর্থন তুলে নেওয়ার কথা জানানোয় মঙ্গলবার সেনসেক্স পড়েছিল ২৮৫ পয়েন্ট। বুধবার ডিএমকে-র ৫ মন্ত্রীই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করায় আরও পতন হয় সূচকের। চিদম্বরম-সহ ইউপিএ নেতাদের অবশ্য দাবি, সরকার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তাতে যে চিঁড়ে ভেজেনি, তা এ দিন সূচকের পিছলে যাওয়া থেকেই স্পষ্ট। সম্প্রতি আর্থিক সংস্কারের যে-কর্মসূচি কেন্দ্র ঘোষণা করেছে, সেই সংক্রান্ত আইনগুলি লোকসভায় পাশ করানো যাবে কি না, তা নিয়েই লগ্নিকারীরা সংশয়ে। পেনশন-সহ নানা ক্ষেত্রে সংস্কার আনতে সংসদে বিল পাশ করানো জরুরি।
পাশাপাশি, সরকার না-টিকলে সাধারণ নির্বাচন এগিয়ে আসবে এবং কংগ্রেস যদি সরকারে ফিরতে না-পারে, তা হলে আর্থিক সংস্কার নিয়ে নতুন সরকারের মনোভাবই বা কী হবে, এই দুশ্চিন্তাও রয়েছে লগ্নিকারীদের। ফলে তাঁরা শেয়ারে এখনই বড় মাপের লগ্নি করতে চাইবেন না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।
সংশয় বেড়েছে আর্থিক ক্ষেত্রেও। ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ বার কিছুটা সুদ কমিয়েছে। কিন্তু ব্যাঙ্কে সুদ কমার পক্ষে তা যে যথেষ্ট নয়, তার প্রমাণ মিলেছে। পাশাপাশি, আগামী পর্যালোচনায় সুদ কমার সম্ভাবনা কম এই ইঙ্গিতও দিয়েছেন গভর্নর ডি সুব্বারাও। ফলে উদ্বেগ পিছু ছাড়ছে না বাজারের। |