স্কুল ছুটির পরে যে যার মতো বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় পাশের মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের শৌচাগারে বোমা ফেটে দুই ছাত্র জখম হয়। বুধবার বিকেল ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে দুবরাজপুরের ধ-গ্রামে। আহত দুই ছাত্র দ্বিতীয় শ্রেণির শেখ রমজান এবং তৃতীয় শ্রেণির রশিদুল ইসলামকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। দু’জনের বাড়ি পাশের সাজিনা গ্রামে।
এ দিন বিকেলে ধ-গ্রামে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। প্রশ্ন উঠেছে, স্কুল চত্বরে যদি বোমা ফেটে জখম হওয়ার ঘটনা ঘটে, তা হলে নিরাপদ জায়গাটা কোথায়? কে বা কারা স্কুলের শৌচাগারে বোমা রাখল এবং তাদের উদ্দেশ্যই বা কী? জেলা পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা বলেন, “কী ভাবে ওখানে বোমা এল, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” জেলা প্রথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষ বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। যেই এ কাজ করে থাকুক, তারা সমাজের ভালো চায় না। ঘটনার কথা শোনা মাত্রই আমি বিদ্যালয় পরিদর্শকে প্রথমে জখম বাচ্চাগুলির চিকিৎসার দিকটা দেখতে বলেছি। কারণ, এখন সেটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। পরে এ বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছি।” হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু’জনের চোখে ও এক জনের বুকে বোমের আঘাত রয়েছে। |
ঠিক কী ঘটেছিল? এ দিন ধ-গ্রাম প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক লক্ষ্মণ দাস ও অন্য শিক্ষকেরা বলেন, “সবে স্কুল ছুটি হয়েছিল। তার ঠিক দু-তিন মিনিটের মধ্যেই একটি বোমা ফাটার আওয়াজে চমকে উঠি। বাইরে বেরিয়ে আসতেই দেখি আমারদের পাশে থাকা ধ-গ্রাম মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রর শৌচাগার থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে এবং ভিড় করে আছে আনেকে। কেউ খবর দিল, স্যার আপনাদের দু’টো ছেলে বোমায় জখম হয়েছে। কিন্তু সেই আবস্থায়ও রশিদুল নামে ছেলেটি বাড়ির দিকে কিছুটা চলে গিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমরা দু’টি স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকেরা মিলে ওদের হাসপাতালে নিয়ে যাই।” কিন্তু শৌচাগারের মধ্যে বোমা এলই বা কী করে? আর ফাটলই বা কী করে? মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষক অশোককুমার আধিকারীর দাবি, “ওই শৌচাগারটি স্কুল থেকে একটু দুরে এবং ব্যবহার হয় না। কিন্তু কী ভাবে বোমা ফেটেছে বলতে পারব না। কারণ, এ দিন আমি দুবরাজপুরে এসেছিলাম। পুলিশ প্রথমিক তদন্তের পরে অবশ্য বলছে, শৌচাগারটি খোলা ছিল।” পুলিশ ও এলাকা সূত্রের খবর, সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামফ্রন্ট স্থানীয় যশপুর পঞায়েতের দখল নিলেও বর্তমানে সেটা তৃণমূলের দখলে। ক্ষমতা নিয়ে এলাকায় একটা রাজনৈতিক অস্থিরতা রয়েছেই। এটা তার প্রকাশ হতে পারে। তবে প্রকাশ্যে এই নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নন। রশিদুলের বাবা গোলাম মর্তুজা এবং রমজানের মা কেরিনা বিবি বলেন, “কী করে যে এমন ঘটনা ঘটল কিছু বুঝতে পারছি না।” |