ধর্ষণের চেষ্টায় ধৃত সরকারি গাড়িচালক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
ধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত জেলাশাসকের দফতরে ব্যবহৃত গাড়ির এক চালক গ্রেফতার হলেন অভিযোগ দায়েরের প্রায় এক মাস পরে। অভিযুক্ত আর এক জনকে এখনও ধরা যায়নি।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম ভোলা পাসোয়ান। মঙ্গলবার রাতে বর্ধমান শহরের আনন্দপল্লি থেকে পুলিশ তাকে ধরে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান আদালতের এক মহিলা মুহুরি অভিযোগ করেন, ভোলা পাসোয়ান ও তরুণ সিংহ নামে সরকারি গাড়ির দুই চালক তাঁকে একা পেয়ে অশ্লীল কথা বলত। শারীরিক সম্পর্ক করতে চাপ দিত। নাবালিকা জোগাড় করে দিতেও বলত। তা না করাতেই তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়। বুধবার সিজেএম আদালতে তোলা হলে ধৃতকে জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মহিলার অভিযোগ, গত ১৯ জানুয়ারি তাঁর কাজের জায়গায় এসেই ওই দুই চালক তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তাঁর চিৎকারে কিছু লোক চলে এলে তারা পালায়। কিন্তু যাওয়ার আগে বলে যায়, তারা জেলাশাসকের দফতরের গাড়ির চালক। ভোলা বর্ধমান উত্তর মহকুমাশাসকের গাড়ি চালায়। কোথাও অভিযোগ করলে পরিণতি ভাল হবে না।
মহিলার বক্তব্য, এই হুমকিতে তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তাই প্রথমে থানায় না গিয়ে গত ২৪ জানুয়ারি জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনার কাছে ওই দু’জনের নামে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু তার পরেও কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় মাসখানেক পরে তিনি থানার দ্বারস্থ হন। কেন ব্যবস্থা নেননি, তার সরাসরি উত্তর এড়িয়ে জেলাশাসক বলেন, “ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করার কথা পুলিশের। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে।” জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মহিলার অভিযোগ হাতে পেয়েই সদ্য বদলি হওয়া অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শরৎ দ্বিবেদী তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলেছিলেন। একটি চিঠি লিখে পুলিশকে ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনে দুই চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলেন। কিন্তু তা হয়নি।
জেলা প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তার দাবি, পরে পুলিশ পাল্টা চিঠি লিখে ফের জানতে চায়, ওই দুই অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। পুলিশ অবশ্য এখন দাবি করছে, প্রশাসনের তরফেই এত দিন দুই অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছিল। এ প্রসঙ্গে বর্ধমান উত্তর মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “আমি ভোলা পাসোয়ানের গ্রেফতার হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে কেন ওঁদের গ্রেফতারে দেরি হয়েছে, তা বলতে পারব না। কারণ বিষয়টি বিচারাধীন।” পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “আগে কী ঘটেছে, তা বলতে পারব না। অভিযোগের কথা শুনেই আমি ওই দুই চালককে গ্রেফতার করতে নির্দেশ দিই। এক জনকে ধরা হয়েছে। অন্য জনকেও গ্রেফতার করা হবে।” |