ট্রেন থামানোর আর্জি জানিয়ে মন্ত্রীকে চিঠি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁকসা |
আসানসোল শিয়ালদহ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে পানাগড় স্টেশনে থামানোর আর্জি জানিয়ে নিত্যযাত্রীদের তরফে কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরীর কাছে চিঠি পাঠালেন সিলামপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল। তিনি জানান, ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে ওই স্টেশনে দাঁড় করানোর প্রয়োজন স্থানীয় যাত্রীদের বহুদিনের। এ নিয়ে বহুবার তাঁরা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সুকুমারবাবুর আশা, রেল প্রতিমন্ত্রী হয়তো এ বার তাঁদের এই আবেদনে সাড়া দেবেন।
পূর্বরেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন এই পানাগড়। সেনা ছাউনি ও বায়ুসেনা ছাউনি দুই থাকায় রেলে যাতায়াতের প্রয়োজনও অনেকটাই। কাঁকসা ব্লক ছাড়াও গলসী ১ ও আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বহু গ্রামের মানুষের ভরসাও এই স্টেশন। পানাগড়ে বেশ বড় বাজারও রয়েছে। ফলে বহু ব্যবসায়ীকেই প্রায় দিনই কলকাতা যেতে হয়। আবার অনেক কলেজ পড়ুয়াও আছেন যাঁরা প্রতিদিনই ব্যন্ডেল বা নৈহাটিতে পড়াশোনা করার জন্য যান।
ব্যান্ডেলের এক কলেজের ছাত্র প্রসেনজিৎ সাহা বলেন, “আসা যাওয়ার অসুবিধার জন্যই আমাকে হস্টেলে থাকতে হয়। যদি ইন্টারসিটি এখানে দাঁড়ায় তাহলে আর হস্টেলে থাকতে হবে না। বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করতে পারব।” সুকুমারবাবু বলেন, “শিয়ালদহ যাওয়ার জন্য হয় দুর্গাপুর অথবা বর্ধমান থেকে ইন্টারসিটি ধরতে হয় আমাদের। তার মধ্যে রাস্তাঘাটে যানবাহনের যা অবস্থা তাতে বেশ কষ্ট করেই যেতে হয়।” তাঁর দাবি, যদি ট্রেনটি পানাগড় স্টেশনে দাঁড়ায় তাহলে এমন অনেকেরই সুবিধা হয়। অন্যান্য নিত্যযাত্রীরাও একই কথা জানান। তাঁদের দাবি, বহুদিন ধরেই ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস পানাগড়ে থামানোর জন্য তাঁরা আবেদন করে আসছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও লাভ হয়নি। তাঁরা জানান, এই অঞ্চলের বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য প্রায়ই কলকাতা যান। ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস যদি এখানে দাঁড়ায় তাহলে খুব সহজেই তাঁরা কলকাতায় পৌঁছাতে পারবেন। কর্মসূত্রেও বহু মানুষ প্রতিদিন ব্যান্ডেল, নৈহাটি বা শিয়ালদহে যান। এমনই একজন অভিরূপ ভট্টাচার্য। ব্যারাকপুরে কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, “ইন্টারসিটি পানাগড়ে থামলে আমাকে আর ঘর ভাড়া করে ব্যারাকপুরে থাকতে হবে না। যাওয়াআসা করেই কাজ সামলে নিতে পারব। আর টাকাও বাঁচবে।”
পানাগড়ের ব্যবসায়ীরাও জানান, ইন্টারসিটি এখানে দাঁড়ালে আমাদের আর শুধু কোলফিল্ডের উপর ভরসা করতে হবে না। ভিড়ের হাত থেকেও রেহাই মিলবে। চিঠি পাঠানোর পরে সকলেই আশা করছেন, রেল প্রতিমন্ত্রী নিশ্চয় ট্রেনটি থামানোর জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেবেন। তবে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বনাথ মুর্মু জানান, বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। |