ফের এসারের গ্যাস প্রকল্পে বাধা
মি দিয়ে দাম না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ফের এসার অয়েলের কর্মীদের কাজে যেতে বাধা দিলেন এলাকার কিছু লোকজন। তাঁদের অধিকাংশই তৃণমূল সমর্থক। সংস্থার কর্তারা বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ায় ঘণ্টা তিনেক বাদে তাঁরা নিরস্ত হন। পরে এসারের অন্যতম কর্তা রবীন ঘোষ বলেন, “বিষয়টি মিটে গিয়েছে।” তবে পাইপলাইনের কাজ সারা দিনে আর হয়নি।
ভূগর্ভস্থ ‘কোল বেড মিথেন’ (সিবিএম) তোলার জন্য বর্ধমানের অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ও কাঁকসা ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় একশোরও বেশি কুয়ো খুঁড়েছে এসার। লগ্নি হয়েছে প্রায় সাতশো কোটি টাকা। পানাগড়ে ম্যাটিক্স ফার্টিলাইজারের সার কারখানা-সহ দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন সংস্থায় তারা গ্যাস সরবরাহ করবে। কাঁকসায় এসারের প্রকল্প থেকে ম্যাটিক্সের কারখানা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পাইপলাইন পাতা হচ্ছে। প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ হয়েও গিয়েছে। সব ঠিকঠাক চললে এপ্রিলের মধ্যে বাকিটাও হয়ে যাবে বলে কর্তাদের আশা। আগামী অগস্ট-সেপ্টেম্বরেই ম্যাটিক্সের কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা।
কিন্তু নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে বারবার এসারের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। জানুয়ারির শেষে জাটগোড়িয়ায় তৃণমূলের নেতৃত্বে প্রকল্পে যাওয়ার রাস্তায় বেড়া দিয়ে জানানো হয়, গ্রামের রাস্তা ব্যবহার করতে গেলে সংস্থাকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে থমকে কাজ। —নিজস্ব চিত্র
তিন দিন কাজ বন্ধ থাকার পরে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। ফেব্রুয়ারিতে মাঝামাঝি ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার লবণাপাড়া ও ধবনি গ্রামে শাসকদলের লোকেদের নেতৃত্বেই ক্ষতিপূরণ ও স্থানীয়দের নিয়োগের দাবিতে ফের কাজে বাধা দেওয়া হয়।
বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ মলানদিঘিতে সংস্থার কর্মীরা যখন কাজে বেরোনোর তোড়জোড় করছেন, সংস্থার অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। মলানদিঘি ছাড়াও পাশের চুয়া ও হরিকি গ্রামের বাসিন্দারা সেখানে হাজির ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত জমির জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ মিলবে বলে গত সেপ্টেম্বরে সংস্থার সঙ্গে তাঁদের চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু জোরকদমে কাজ চলা সত্ত্বেও তাঁরা টাকা পাননি। নির্দিষ্ট আশ্বাস না মেলা পর্যন্ত তাঁরা কাউকে কাজে যেতে দেবেন না। গাড়িগুলিও আটকে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম ঘোষ, গৌতম ঘোষ, চন্ডীচরণ ঘোষেরা অভিযোগ করেন, “মোট ১১৮ ডেসিমেল জমির জন্য বছরে ২৫ হাজার টাকা হারে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল চুক্তিতে। কিন্তু তা আজও মেলেনি।” আর এক বিক্ষোভকারী দামাল ঘোষের অভিযোগ, “মাটির নীচে পাইপলাইন পাতার জন্য প্রতি মিটার পাইপ পিছু তিনশো টাকা করে দেওয়া হবে বলে সংস্থার তরফে বলা হয়েছিল। তা-ও মেলেনি।” এসার সূত্রে বলা হয়েছে, মলানদিঘিতে এক জমিদাতার সঙ্গে জমির দাম নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই তাদের আলোচনা চলছিল। নানা কারণে গোটা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে সময় লেগেছে। রবীনবাবু বলেন, “ওঁর সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়ে গিয়েছে। আর কোনও সমস্যা নেই।”
কিন্তু সারা দিন কাজ না হওয়ায় এসার কর্তারা হতাশ। কাঁকসায় প্রকল্পের কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার আধিকারিক রাকেশ পটেল বলেন, “বিক্ষোভের ফলে আমাদের বেশ ক্ষতি হল। কাজ পিছিয়ে গেল।” জমির জট খুললেও প্রতি মিটার পাইপলাইন পিছু টাকা দেওয়ার যে দাবি তোলা হয়েছে, তা নিয়ে এসারের তরফে কিছু জানানো হয়নি। প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য তথা কাঁকসার প্রাক্তন ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী বলেন, “কাজ যাতে ফের বাধা না পায়, সে ব্যাপারে কথা বলব। তবে এসার-ও গ্রামবাসীদের সঙ্গত দাবি পূরণে ব্যবস্থা নিক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.