আইটিআই কলেজ তৈরির জন্য ইট, বালি-পাথর সরবরাহের বরাত নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের দু-দল সমর্থকের মধ্যে তুমুল বোমার লড়াইয়ে অন্তত ৩ জন জখম হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোর ৫টা নাগাদ বৈষ্ণবনগর থানার কামাত ও নন্দলালপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বোমার আঘাতে মণিরুল শেখ নামে এক তৃণমূল সমর্থকের ডান হাতের কব্জি থেকে পাঁচ আঙুল উড়ে গিয়েছে। কংগ্রেস সমর্থকরা ৬ তৃণমূল সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ। মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে যায়। হামলাকারীরা সবাই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। সর্ংঘষের ঘটনায় যুক্ত এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তল্লাশি চলছে।” |
জখম তৃণমূল সমর্থক মণিরুল শেখ। মালদহ মেডিক্যাল কলেজে।—নিজস্ব চিত্র |
ওই হামলায় জখম তৃণমূল সমর্থক মণিরুল শেখকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। জখম সিরাজুল শেখ ও আনিকুল শেখকে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে !
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের নারী সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র অবশ্য কংগ্রেসের মদতেই ওই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, “ওই কলেজ তৈরির সময়ে নিম্ন মানের সরঞ্জাম ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আমাদের ছেলেরা বাধা দিতে যায়। সে জন্য কংগ্রেসের মদতে হামলা হয়।”
মালদহ জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী অবশ্য এ দিন দাবি করেন, তৃণমূল কংগ্রেস যাঁদের দলের সমর্থক বলে দাবি করছে, তারা সবাই কয়েক দিন আগেও সিপিএম করত। এই নিয়ে তাঁর অভিযোগ, “সিপিএমের লোকজনই এখন তৃণমূলে নাম লিখিয়ে কংগ্রেসের উপরে হামলা করছে।” তা হলে তৃণমূলের ৩ জন বোমায় জখম হলেন কেন? জবাবে জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “তৃণমূলের লোকজন নিজেদের বোমাতেই জখম হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হছর দুয়েক আগে মালদহে আইটিআই কলেজ তৈরির কাজ শুরু হয়। সেখানে সরঞ্জাম সরবরাহ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে কামাত গ্রামের কংগ্রেস সমর্থক গেদু শেখ, বক্কার শেখ, সফি শেখদের সঙ্গে পাশের গ্রাম নন্দলালপুরের সিপিএমের সমর্থক বিশু শেখ, মনিরুল শেখের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বাম সরকারের আমলে আগে বিশু শেখ, মনিরুল শেখ ওই আইটিআই কলেজের সরঞ্জাম সরবরাহ করত। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরই বিশু শেখদের দাপট কমে যায়। উঠে আসে কংগ্রেসের গেদু শেখ, বক্কার শেখরা। এলাকারবাসীরা জানান, মনিরুল, বিশুরা বছরখানেক আগে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। জোট ভেঙে যাওয়ার পরে এলাকায় কংগ্রেস ও সদ্য তৃণমূলীদের সঙ্গে তাদের বিরোধ চরমে ওঠে। মাঝে দু’বার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। |