গ্রামের মধ্যে না খুঁড়ে, পাণ্ডববর্জিত জায়গায় পানীয় জলের জন্য নলকূপ খোঁড়া হচ্ছেএই অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০-এ জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন হুড়ার মধুবন গ্রামের বাসিন্দারা। এ দিন বেলা সাড়ে দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত অবরোধ হয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, লক্ষণপুর পঞ্চায়েতের মধুবন গ্রামের পিছনের দিকে মধুবন-কাপাসগোড়া রাস্তার পাশে এ দিন সকালে নলকূপ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। ওই জায়গাটি গ্রামের জনবসতি থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে। সেখানে মাত্র একটিই বাড়ি রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামের গোপপাড়ায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। জলের সমস্যায় ভুগছে স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও। ওই জায়গাগুলিতে নলকূপ বসানোর জন্য বিডিও-র কাছে ইতিমধ্যে লিখিত আবেদনও করা হয়েছে। গ্রামবাসী সন্দীপ গোপ, খেদু গোপদের ক্ষোভ, “যেখানে দাবি রয়েছে, তার বদলে জনবসতিহীন জায়গায় নলকূপ খোঁড়ার কাজ শুরু হল।”
|
পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০ এ জাতীয় সড়কে অবরোধে আটকে গাড়ি। হুড়ার মধুবনে প্রদীপ মাহাতোর তোলা ছবি। |
যাঁরা নলকূপ খননের কাজ করছিলেন, তাঁদের কাছে গ্রামের লোক জানতে চান, কার নির্দেশে কাজ হচ্ছে। পঞ্চায়েতের কথা জেনে গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য, তৃণমূলের চিত্তরঞ্জন মাহাতোকে ঘিরে ধরেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চিত্তরঞ্জনবাবু তাঁদের জানান, এখানে নলকূপ খোঁড়ার কথা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। লোকজন জানতে চান, কোন বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে, কারা সেখানে ছিলেন। গোলমালের মাঝে চিত্তরঞ্জনবাবু সেখান থেকে চলে গেলে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা পথ অবরোধ শুরু করেন।
অবরোধকারীদের দাবি প্রশাসনের কাছে পৌঁছনোর আশ্বাস পুলিশ দেওয়ায় অবরোধ ওঠে। পরে হুড়ার বিডিও সুব্রত পালিত ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীদের দাবি মেনে গ্রামে শীঘ্রই নলকূপ খোঁড়ার আশ্বাস দেন। বিডিও বলেন, “আপাতত ওই নলকূপের কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে।” পরে চিত্তরঞ্জনবাবু বলেন, “আমি স্কুলে পড়াই। স্কুলের সময় হয়ে গিয়েছিল বলেই আমি ওখান থেকে চলে গিয়েছিলাম।” গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “যেখানে এ দিন খননের কাজ শুরু হয়েছিল, সেখানে হবে বলে আগাম সিদ্ধান্ত হয়ে রয়েছে। এখন তাঁরা নতুন করে দাবি করলে আমি কী বলব?” লক্ষণপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মিঠু বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই কথা বলেছেন। তবে তাঁর কথায়, “গ্রামবাসীদের দাবি হয়তো সঠিক। কারন গরম আসছে।” তাহলে তুলনায় ফাঁকা জায়গায় নলকূপ খোঁড়ার সিদ্ধান্ত কি বিশেষ কাউকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই? প্রধানের জবাব, “তা নয়। এই নলকূপ রাস্তার পাশে হচ্ছিল। লোকজন ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। তা ছাড়া এই নলকূপ খননের সিদ্ধান্ত বৈঠকের মধ্যেই গৃহীত হয়েছে।” |