ঢেলে সাজানো হচ্ছে বহরমপুর ওয়াইএমএ (ইয়ং মেন্স অ্যাসোসিয়েশন) মাঠ। মাস খানেক পর ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানের মতোই ‘আলোয়’ ভাসবে রাতের ওয়াইএমএ।
প্রকল্প অনুযায়ী, মাঠের এক পাশে থাকছে ফোয়ারা, সাউন্ড বক্স। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তাতে বাজবে গজল, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, আধুনিক ও বাংলা ব্যান্ডের গান। মাঠের তিন দিকে হবে সবুজায়ন। এই নির্মল বিনোদন ও অবসর যাপনের যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। প্রকল্প ব্যয় প্রায় এক কোটি টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান শহরের বেশ কিছু জায়গায় এখনও রাস্তা কাচা। সেখানে এত টাকা ব্যয় করে মাঠ সাজানো নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শহরের মানুষের একাংশের মতে জনবহুল এলকার মাঠ সাজিয়ে পুরসভা সৌন্দর্যায়ন ও সবুজায়নের প্রচার করে নিজেদের খামতি ঢাকতে চাইছে। তবে পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য এ সব অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, “এই শহরের কয়েকটি ছোটখাটো রাস্তার সংস্কার কাজ আটকে আছে ঠিকই। |
সাজছে মাঠ। বহরমপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
সেগুলোরও সংস্কার হবে। তবে এক সময় সবুজে মোড়া এই শহর থেকে সবুজটাই উধাও হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে মাঠগুলিও জবরদখল হয়ে যাচ্ছে। সে সব আটকাতেই সবুজায়ন ও সৌন্দর্যায়নের প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।”
পুরপ্রধান জানান, প্রায় ২৫ বিঘার মাঠের পূর্বপ্রান্ত ঘেঁষা ব্যস্ত সড়কের পাশেই রয়েছে বহরমপুর কলেজ, সরকারি আবাসন ও সঞ্চারিকা ভবন। মাঠের পশ্চিম দিক বরাবর রয়েছে বহরমপুর গার্লস কলেজের উঁচু পাচিল। উত্তরে রাস্তা আর দক্ষিণে রয়েছে গীর্জা। গার্লস কলেজের দিক বাদ দিয়ে রাস্তা বরাবর মাঠের তিনটি প্রান্তই জবরদখল করে গড়ে উঠেছিল দোকানপাট। মাস তিনেক আগে ওই এলাকাগুলি জবরদখল মুক্ত করে পুরসভা। মাঠের তিন দিকে পাচিল দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠের দিকে একটি পাচিল দেওয়ার পর মাঝখানে ১০ ফুট চওড়া জায়গা ফাঁকা রেখে রাস্তার দিকে আরও একটি সমাম্তরাল পাচিল তোলা হয়েছে। দুই পাচিলের মাঝখানের ওই ১০ ফুট চওড়া ফাঁকা জায়গায় হবে সবুজায়ন, ফোয়ারা, বসার জায়গা, বসানো হবে সাউন্ড বক্স। ওয়াই এম এ মাঠের দক্ষিণ পূর্ব দিকে ৮০ ফুট উঁচু বাতিস্তম্ভের মাথা থেকে বিচ্ছুরিত হবে হাইমাস্ট আলো। গালর্স কলেজের দেওয়ালের দিক বাদ দিয়ে মাঠের বাকি তিন দিকে থাকছে ত্রিফলা আলোর মতো দেখতে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ৩৯টি এলইডি লাইট।
নীলরতনবাবু বলেন, “সব মিলিয়ে রাতের ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানের মতোই রাতের ওয়াইএমএ মাঠও ভাসবে আলোয়। মাঠের এক কোনায় পদ্মফুলের আকৃতির আসনের উপর বসানো হবে ১০ ফুট উচ্চতার রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মূর্তি। কাজ শেষের পথে। আশা করছি দিন কুড়ি পর উদ্বোধন করা হবে।” কিন্তু ওই বাড়তি আলোর জন্য বিদ্যুৎ খরচ যোগাবে কে? পুরপ্রধানের জবাব, “বিদ্যুৎ খরচের শতকরা ৬০ ভাগ দেবে একটি বেসরকারি সংস্থা। বাকি ৪০ ভাগ মেটাবে পুরসভা।” |