কালোর্স হার্নান্ডেজ সকালে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। বিকেলে তাকে পাল্টা জবাব দিয়ে উগা ওপারা জমিয়ে দিলেন বুধবারের আই এফ এ শিল্ড ফাইনালের মঞ্চ।
মাঠে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে প্রয়াগের বিশ্বকাপার কার্লোস বলে দিয়েছিলেন, “মাঠেই বুঝিয়ে দেব কার্লোস কে!” যাঁর উত্তরে ওপারা বলে দিলেন, “কার্লোস-র্যান্টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। প্রয়াগকে হারিয়ে শিল্ড জিততে চাইছি আমরা।”
কার্লোস যেন প্রয়াগের মারিও বালোতেলি। বালোতেলির মতো তাঁকে ঘিরেও বিতকের্র অন্ত নেই। কোস্তারিকায় ছুটি কাটিয়ে ফিরে আসার পর যা আরও বেড়েছে। অথচ বল পায়ে যখন মাঠে নামেন তখন তাঁর দু’পা থেকে ফুলঝুরির মতো গোলের ঠিকানা লেখা পাস বেরোয়।
এলকো সাতোরির টিমে কার্লোস ফ্রি ফুটবলার হিসাবে খেললেও তাঁকে রোখার মূল দায়িত্ব থাকবে ওপারার ওপরই। লাল-হলুদ কোচ মর্গ্যান এ দিনও র্যান্টির সঙ্গে কার্লোসকে ম্যাচ উইনার বলে প্রশংসা করেছেন। তাঁর দলের ফুটবলাররা অবশ্য কার্লোসদের গুরত্ব দিতে নারাজ। ওপারার মতো ইস্টবেঙ্গলের আর এক ডিফেন্ডার খাবরা তো পরিষ্কার বলে দিলেন, “প্রথমে আমরা জানতাম না কার্লোস কোন স্টাইলে খেলে। এখন সেটা জেনে গেছি। তাই ওকে আটকানো অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।”
যা শুনে কার্লোস আরও তেতে গেছেন। খাবরাদের উড়িয়ে দেওয়ার মনোভাব দেখে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “ফুটবল একটা নির্দিষ্ট দিনের খেলা। যে দল ভাল খেলবে, সেই দল সাফল্য পাবে। আমরা কিন্তু জেতার জন্য তৈরি।” কার্লোস-ওপারা লড়াই আসলে একটা আগুনের ফুলকি মাত্র। দুই শিবিরের অনুশীলনে গিয়েই দেখা গেল রীতিমতো তেতে রয়েছেন সবাই। |
মর্গ্যান-বধের স্ট্র্যাটেজি। আলোচনায় সাতোরি-কার্লোস। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
এ দিন অনুশীলনের পর প্রয়াগের গোলকিপার সুব্রত পাল আর কোচ এলকো সাতোরির নাকি তীব্র মনোমালিন্য হয়েছে। হঠাৎ গুজবে সরগরম ময়দান। মোহনবাগানে করিম-টোলগে বিতর্কের পর কোচ-ফুটবলার বিতর্কটা এই মুহূর্তে বাজারে ‘হট কেকে’র মতোই বিকোচ্ছে। এ দিন হঠাৎই অনুশীলনের পর এলকো-সুব্রতর ঝামেলার খবর ছড়িয়ে পড়ে। কোনও কর্তা সরকারি ভাবে তা স্বীকার না করলেও যুবভারতী ছাড়ার আগে ডাচ কোচের মন্তব্য গুজব আরও উস্কে দিয়েছে। এলকো বলে দেন, “সুব্রত ঠিক কী রকম পরিস্থিতিতে আছে তা জানি না। কারণ, আমি ওর খেলা অনেক দিন দেখিনি। এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের খেলাও দেখা হয়নি। ওকে খেলানোর ঝুঁকি নেব কী ভাবে?” এলকোর এই মন্তব্যে সুব্রতর জবাব, “সময় আসলেই সব প্রশ্নের উত্তর দেব।”
সংগ্রাম মুখোপাধ্যায় রেলের হয়ে খেলতে গেছেন। ফাইনালের আগের দিন দলের সঙ্গে অনুশীলনও করেননি। মঙ্গলবার রাতে শহরে ফিরেছেন তিনি। অফিস ম্যাচের জন্য বাকি দুই গোলকিপারকে পাওয়াই যাবে না। অথচ ফাইনালের আগের দিন সুব্রত একা দলের সঙ্গে অনুশীলন করলেও তাঁকে প্রথম একাদশে কেন রাখা হচ্ছে না, তা নিয়ে না কি ঝামেলা। সেমিফাইনালে ভাল খেলার সুবাদে আজ বুধবার সংগ্রামকেই খেলাতে চান এলকো।
প্রয়াগ শিবিরে অবশ্য কে পেনাল্টি মারবে তা নিয়ে আগে থেকেই ঝামেলা আছে। শিলিগুড়িতে তা প্রকাশ্যেও এসেছে। তাই এলকো বলে দিলেন, “এ বার পেনাল্টি কারা মারবে সেই তালিকা আমি আগে থেকেই তৈরি করে রাখব।”
কিন্তু পেনাল্টি মারার জন্য এক নম্বর নাম কার? র্যান্টি না কার্লোসের? তা অবশ্য বলেননি রাশভারী এলকো। |