নোনাডাঙা তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের জট ছাড়াতে এ বার মন্ত্রিসভার দ্বারস্থ হচ্ছে সরকারের দুই দফতর। ‘ট্রান্সফার ফি’ নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ও পুর দফতরের মধ্যে টানাপোড়েনের জেরে থমকে রয়েছে কাজ। ন্যূনতম পরিকাঠামো তৈরি না-হওয়ায় আটকে আছে তিনটি প্রথম সারির তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার বিনিয়োগও।
নোনাডাঙা তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে ২০১০ সালে জমি পেয়েছে এইচএসবিসি, রোল্টা ও এইচসিএল। রাজ্য সরকারের নির্ধারিত দামেই জমি লিজ নেয় তিন সংস্থা। তারা জমি পায় একর প্রতিএক কোটি কুড়ি লক্ষ টাকা দরে।
২০০৮-’০৯ সালের মন্দা কাটিয়ে সে সময়ে ছন্দে ফিরছিল তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। স্থগিত হয়ে যাওয়া সম্প্রসারণ পরিকল্পনাগুলি ফের বাস্তবায়িত করতে আগ্রহী হচ্ছিল বিভিন্ন সংস্থা। একই পথে হাঁটতে চাইছিল এইচএসবিসি, রোল্টা ও এইচসিএল-ও। রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি মাফিক জমি পাওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকল্প চালু করার কথা। কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিলেও নিকাশি,জল, রাস্তা, বিদ্যুৎ সংযোগের মতো দরকারি পরিকাঠামো তৈরি করে দেয়নি রাজ্য সরকার। ফলে প্রকল্পের কাজ এগোনো যায়নি বলে অভিযোগ সংস্থাগুলির।
বস্তুত, পুর দফতরের অধীন সংস্থা কেএমডিএ-র কাছ থেকে এই জমি নিয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। হস্তান্তরের পরে তিন সংস্থাকে জমি লিজে দেয় তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। সমস্যার সূত্রপাত সেখানেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, দুই দফতরের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, বেসরকারি সংস্থাকে জমি দেওয়ার সময়ে ‘ট্রান্সফার ফি’ বাবদ কিছু টাকা কেএমডিএ-কে দেওয়ার কথা। তথ্যপ্রযুক্তি দফতর সে সময়ে ওই টাকা দেয়নি। তা নিয়ে তখন বিশেষ মাথা ঘামায়নি পুর দফতরও।
জমিটিতে পূর্ব প্রতিশ্রুতি মতো পরিকাঠামো গড়ে দেওয়ার দায়িত্ব কেএমডিএ-র। সংস্থা সে কথা অস্বীকারও করেনি। কিন্তু এ বার ‘ট্রান্সফার ফি’ বাবদ টাকা না-পেলে কাজে হাত দেবে না বলে জানিয়েছে কেএমডিএ। অথচ সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, যে-টাকা তারা দাবি করছে, তা তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের পক্ষে দেওয়া মুশকিল।
দু’বছরের বেশি প্রকল্প ঝুলে থাকার খবর মুখ্যমন্ত্রীও শুনেছেন। কাজিয়া দ্রুত মেটাতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তাই রফাসূত্র খুঁজতে মন্ত্রিসভায় যাচ্ছে দুই দফতর। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, মন্ত্রিসভার সবুজ সঙ্কেত পেলে এ ধরনের প্রশাসনিক জটে নতুন বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা কম। এর আগে পুরনো দরে আইটিসি ইনফোটেককে জমি দেওয়া নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর মন্ত্রিসভার উপরে নির্ভর করে। কারণ পুরনো দামে জমি দেওয়ার দায় নিতে চায়নি হিডকো।
কাজ শুরু হলে নোনাডাঙায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকার লগ্নি ও কমপক্ষে ১২ হাজার কাজের সুযোগ হবে। তথ্যপ্রযুক্তি মহলের মতে রাজ্যের ফিকে লগ্নি চিত্রে রং ভরতে সাহায্য করবে এই প্রকল্প। |