বেনজির ভিড়ে নাজেহাল বোলপুর কর্মসংস্থান কেন্দ্র
মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক একটি ঘোষণা। আর সেই ঘোষণাই বদলে দিয়েছে কর্মসংস্থান কেন্দ্রের (এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ) নিত্য দিনের চেহারা। আগে যেখানে দফতরের কর্মীদের কাজই ছিল কার্যত মাছি তাড়ানো, সেখানে ওই ঘোষণার পর থেকে ভিড় সামলাতে পায়ের ঘাম মাথায় ছুটেছে কর্মীদের। সেদিক থেকে দেখতে গেলে কেন্দ্রগুলিতে এ নিয়ে আগাম কোনও প্রস্তুতিও ছিল না। ফলে হঠাৎ ভিড়ে নাজেহাল কর্মীর অভাবে ধুঁকতে থাকা বোলপুর কর্মসংস্থান কেন্দ্রের। পরিস্থিতি এমন, যে কোনও দিন ভিড় বেকাবু হয়ে কোনও অঘটন ঘটিয়ে ফেলতে পারে, এই আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই দফতরের ভেতরে ও বাইরে পুলিশও মোতায়েন করতে হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের থেকে ওই দফতরের সামনে ভিড় নিয়ন্ত্রণেই বেশি ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে প্রশাসনকেও!
এ দিকে, ভাতা পাওয়ার আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা চড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকছেন অসংখ্য বেকার যুবকযুবতী। বস্তুত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই ঘোষণার পর থেকেই কর্মব্যাঙ্কে (এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক) নাম নথিভুক্ত করতে আগেও ভিড় দেখা গিয়েছিল এলাকার সাইবার ক্যাফেগুলিতে। যার পরের পদক্ষেপই ছিল, কর্মসংস্থান কেন্দ্রে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দেওয়া। আর এই পর্যায়েই ভিড়ের বহরে প্রাণ ওষ্ঠাগত— লাইনে অপেক্ষারত ভাতাপ্রার্থীদের। আর প্রয়োজনীয় কর্মীর অভাবে নাকানি চোবানি খাচ্ছেন ওই দফতরের তিন কর্মীরও। যার জেরে অনেকক্ষণ সময় লাগঠে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন মহকুমার দূরদূরান্ত থেকে আসা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বেকার যুবকযুবতীরা। ইলামবাজারের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ শেখ আব্বাসউদ্দিনদের অভিযোগ, “সেই ভোর থেকে লাইন দিয়েছি। শ’য়ে শ’য়ে ভিড় বাড়ছে। তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। এখনও নাম লেখাতে পারলাম না।!” আর লক্ষ্মী মুর্মু, সামসুন্নেসা বিবিরা বললেন, “একেই প্রচণ্ড রোদ। তার উপরে এত ভিড়। কখন বাড়ি ফিরব জানি না। দু’ দিন দাঁড়িয়ে থেকেও নাম লেখাতে পারিনি।”
নাম তোলার হিড়িক। মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
জেলা কর্মসংস্থান দফতর সূত্রের খবর, সাধারণত এই ধরনের দফতরে দু’জন আধিকারিক ও ১২ জন কর্মী নিয়ে মোট ১৪ জনের অনুমোদিত পদ থাকে। কিন্তু অবসরের পর কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় বোলপুরের ক্ষেত্রে সেটা ১৪ জনের জায়গায় দাঁড়িয়েছে তিনে! ফলে তিন জনের পক্ষে এই ভিড় সামলানো কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, আগে এই কেন্দ্রে মেরে কেটে দিনে তিন থেকে চার জন নাম লেখাতে আসতেন। “সেই ভিড় সামলানো আর এই হাজারের ভিড় সামলানো তো এক নয়!”— বললেন জেলা কর্মসংস্থান কেন্দ্রের বোলপুর দফতরের উপ-অধিকর্তা চিন্ময় বটশাল। তিনি জানান, ঘোষণার পর থেকে কর্মসংস্থান কেন্দ্রে এবং কর্মসংস্থান ব্যাঙ্কের জন্য নাম লেখাতে প্রতিদিন হাজারেরও বেশি ভিড় হচ্ছে। কিন্তু কর্মীর অভাবে দ্রুত কাজ সারতে অসুবিধাও হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে, জেলা দফতরের সহ-অধিকর্তা রাসবিহারী কুণ্ডুকেও জরুরি ভিত্তিতে বোলপুর দফতরে কাজ করতে হচ্ছে! তবে চিন্ময়বাবুর দাবি, “সমস্যার কথা জানিয়ে অবিলম্বে এই কেন্দ্রে কর্মী নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। তা ছাড়া আমরা নিজেদের মতো করে চেষ্টা তো করছিই।”
চিন্ময়বাবু বোলপুরের মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানানোর পরপরই ওই কেন্দ্রের জন্য পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বোলপুর জামবুনি বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার পথে ওই দফতরে এক মহিলা-সহ তিন জন পুলিশ কর্মী থাকছেন। এমন পরিস্থিতি তৈরির হওয়ার কথা স্বীকার করে মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতিও জানিয়েছেন, ওখানে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনও ব্যাঘাত না হয়,তার দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.