পরপর ডাকাতি, লুঠ ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের একজনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় কোচবিহারের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মহলের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে আতঙ্ক এতটাই বেড়েছে যে বাসিন্দারা রাত পাহারার ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়েছে। সন্ধ্যার পরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ডাউয়াগুড়ি এলাকার বেশিরভাগ দোকান।
শুক্রবার ও শনিবার এলাকায় পরপর দুটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে ডাউয়াগুড়িতে। বৃহস্পতিবার রাতে কোতোয়ালির পূর্ব খাগরাবাড়িতে একটি বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুঠ এবং শুক্রবার তুফানগঞ্জের নাটাবাড়িতে একটি দেশি মদের দোকানের কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই হয় বলে অভিযোগ। পরপর তিন রাতে চারটি ঘটনার পরেও সোমবার পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকী ওই সব ঘটনাগুলি নিয়ে তদন্তের কাজও যে খুব বেশি এগোয়নি তা পুলিশ সুপারের বক্তব্যে স্পষ্ট। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ডাউয়াগুড়িতে জায়গা পেলে পুলিশ ক্যাম্প করা হবে।” দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যের ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “ওই বিষয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলব।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত পাঁচ মাস থেকে জেলাজুড়ে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, লুঠের ঘটনা ৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে ১১টি ডাকাতির ঘটনা রয়েছে বলে অভিযোগ। বাণেশ্বর, রাজারহাট, খাগরাবাড়ি, তুফানগঞ্জ, বক্সিরহাট, জামালদহ, ভেটাগুড়ি, দিনহাটা, মাথাভাঙা এলাকায় দোকান, বাড়ি ও মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরি হয়েছে কয়েকটি বাইক। কোচবিহার শহরে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির দোকানে অস্ত্র চুরি হয়েছে। খোদ পুলিশ সুপারের বাংলো সংলগ্ন এলাকায় তিন দোকানে চুরি হয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে ব্যাঙ্কের কিছু শাখায় ভল্ট কেটে টাকা লুঠের ঘটনা। কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার্স অ্যান্ড কমার্স সম্পাদক রাজেন বৈদ্য বলেন, “পরপর ঘটনায় জেলার ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। দ্রুত অপরাধীদের ধরার জন্য পুলিশের আরও সক্রিয়তা দরকার। পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।” গুড়িয়াহাটির বাসিন্দা সুজিত দে ভৌমিক বলেন, “পরপর চুরি ডাকাতির ঘটনায় বাসিন্দাদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। এলাকায় মিটিং করে রাত পাহারার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” |