দু’জনেই প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিতর্কিত। রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কের প্রথম দিনে সিপিএমের জোড়া ফলা ওঁরা দু’জন, সুশান্ত ঘোষ ও আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। এবং দু’জনের বক্তব্যেই প্রাণপণে বাধা দেওয়ার
চেষ্টা চালিয়ে গেলেন শাসক দল তৃণমূলের বিধায়করা।
আইনশৃঙ্খলা এবং তোলাবাজির একের পর অভিযোগের উদাহরণ দিয়ে সোমবার সরকার পক্ষকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছেন সুশান্ত-রেজ্জাক জুটি। নাম উল্লেখ না-করেই তৃণমূলের প্রাক্তন
বিধায়ক দীপক ঘোষের বইয়ের প্রসঙ্গ তুলে সুশান্তবাবু জানতে চান, সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে প্রশ্রয় দেওয়া-সহ গুরুতর সব অভিযোগ সত্ত্বেও লেখকের বিরুদ্ধে শাসকদল চুপ কেন? শাসকদল পঞ্চায়েত ভোট বানচালের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে রেজ্জাক মন্তব্য করেন, “মানুষ বলছে, চোর তাড়াতে গিয়ে ডাকাত এনেছি! ডাকাতের হাতে আবার বন্দুক আছে। তবে চাবুকের ডগায় শাসন বেশি দিন চলবে না!”
ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে তৃণমূল বিধায়কদের লাগাতার বিরোধিতা, কটাক্ষের মধ্যেও এক বারও বক্তব্য থামাননি সুশান্তবাবু। তবে দীপকবাবুর নাম না-করে তাঁর ওই বই নিয়ে কথা বলার সময় তাঁকে থামিয়ে ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ বলেন, বিষয়টি এখন বিচারাধীন। তাই ওই নিয়ে বিধানসভায় কথা বলা যাবে না। পরে সুশান্তবাবু অবশ্য বলেন, “পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, মামলা হয়নি। এর প্রতিবাদে চিঠি দিতে হবে।”
সুশান্তবাবুর আরও অভিযোগ, তৃণমূল যে ভাবে আগে মাওবাদীদের মদত দিয়েছে, অন্য কোনও রাজ্যে তেমন ঘটনা ঘটেনি। সুশান্তবাবুর পরে বলতে উঠে শালবনির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো অবশ্য পাল্টা বলেন, “১৯৯৮ থেকে ২০০১, এই সময়টায় শালবনি-গড়বেতায় কিষেণজি’দের কারা নিয়ে এসেছিল? চোরের মায়ের বড় গলা!”
অন্য দিকে, রেজ্জাক বলেন, “রাজ্যপালের ভাষণ শুনে মনে হচ্ছে, আমাদের রাজ্য মরূদ্যান। অথচ রাজ্যে যত শিলান্যাস হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হয়েছে নারীদের উপরে বলাৎকার!” তৃণমূলের প্রবল হইচইয়ের মধ্যেই রেজ্জাক টেনে আনেন চম্পলা সর্দার-কাণ্ড, “ভাঙড়ের চম্পলা সর্দারের নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী। পরে ধর্ষণের প্রমাণ না মেলায় বলেছিলেন, ‘সায়েন্টিফিক রেপ’। তার পরে আর খোঁজই রাখেননি।” তবে উচ্চ শিক্ষায় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে রেজ্জাক বলেন, “কবে কার্যকর হবে, জানি না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, আদাব, সেলাম জানাচ্ছি!” রেজ্জাকের উপরে হামলার নিন্দায় সরব হন সুশান্তবাবু। আর আরএসপি-র বিধায়ক সুভাষ নস্কর বিতর্কে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়কে এত হাসিয়ে এলেন যে, বিধানসভায় পাহাড়ের তিন বিধায়কের আসন শূন্যই থাকছে!” |