|
|
|
|
শরিকি চাপ, ভারত ভোট দিতে চলেছে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ডিএমকে নেতৃত্বকে বোঝানো ও তার পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আমেরিকার প্রস্তাবকে লঘু করার চেষ্টা চালিয়ে দু’কূল রক্ষা করার চেষ্টা চালাচ্ছিল ভারত। কিন্তু তাতে শরিকি সমস্যা মেটাতে পারছে না মনমোহন সিংহের সরকার। এবং এই পরিস্থিতিতে শরিকি রাজনীতির চাপে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপুঞ্জে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মার্কিন প্রস্তাবে সমর্থন করতে চলেছে নয়াদিল্লি।
তামিল আবেগের প্রশ্ন তুলে ডিএমকে-প্রধান এম কে করুণানিধি গত কাল কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন তোলার হুমকি দিয়েছিলেন। রাজ্যের তামিল আবেগকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে জয়ললিতা রাষ্ট্রপুঞ্জে ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করার দাবি জানিয়ে রেখেছেন। ডিএমকে কোনও ভাবেই তাদের থেকে পিছিয়ে থাকতে রাজি নয় এই ক্ষেত্রে। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পি চিদম্বরম, এ কে অ্যান্টনি ও গুলাম নবি আজাদ কংগ্রেসের এই তিন শীর্ষস্থানীয় নেতা আজ করুণানিধির বাসভবনে গিয়ে আলোচনা করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেও সন্তুষ্ট হননি করুণানিধি। কেন্দ্রকে চাপে রাখতে এ দিনও তিনি সরকার থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দেন। তবে জোট থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দিলেও লোকসভার অকালভোট এড়াতে ডিএমকে বাইরে থেকে সরকারকে সমর্থন জোগাতে পারে বলেও এ দিন ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী লোকসভা ভোটের আগে ডিএমকে-কে চটাতে চাইছে না কেন্দ্র।
এবং কার্যত সে কারণেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রস্তাবে শেষ পর্যন্ত সমর্থনই করতে চলেছে দিল্লি।
কিন্তু শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাটাও কূটনৈতিক ভাবে ভারতের পক্ষে জরুরি। সে দেশে চিনা প্রভাব বাড়ছে। ফলে, কলম্বোর সঙ্গে বাণিজ্য ও কৌশলগত ক্ষেত্রে আদানপ্রদান মনমোহন সরকারের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া একই পরিপ্রেক্ষিতে কশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তাব এনে ভারতকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করা হতে পারে বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রকের একাংশ।
এই ক্ষেত্রে সাপও মরবে কিন্তু লাঠিও অটুট থাকবে, এমন পথই খুঁজছে নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, আমেরিকার প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাবটিতে বলা হয়েছিল এলটিটিই-কে নির্মূল করার সময়ে শ্রীলঙ্কা সেনার যুদ্ধাপরাধ করেছে কিনা তার বিশ্বাসযোগ্য, স্বাধীন এবং আন্তর্জাতিক তদন্ত করাতে হবে। এবং সেই তদন্তে রাজাপক্ষে সরকারের তরফে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনারের কর্তাদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
এই খসড়া প্রস্তাবটিকে কিছুটা লঘু করার জন্য গত এক সপ্তাহ ধরেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে দৌত্য চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। আমেরিকা তাদের প্রস্তাবের খসড়া চূড়ান্ত করার পরে নয়াদিল্লি তা খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, এমনটাই স্থির হয়ে রয়েছে। তার আগে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত দিলীপ সিংহকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। আগামী কাল তাঁর সঙ্গে বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই। |
|
|
|
|
|