রাস্তার পাশে পড়ে থাকা যুবকের প্যান্টের পকেটে গোঁজা ছিল ভোটার কার্ড। কিন্তু তাঁর নিজের নয়। বরং তাঁকে খুন করে তাঁর পকেটে ওই কার্ড গুঁজে দেওয়া হয় বলে পুলিশের সন্দেহ। যার কার্ড তাকে ধরা না গেলেও তার দাদা গ্রেফতার হয়েছে।
বছর ত্রিশের ওই যুবকের দেহ মেলে শনিবার বর্ধমানে পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভা গ্রামে এসটিকেকে রোডের পাশে। পুলিশ জানায়, গলার কাছে একটি কালো দাগ ছাড়া দেহে আর আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে মুখ বিকৃত করার চেষ্টা হয়েছিল। সোমবার রাত পর্যন্ত তাঁর পরিচয় পুলিশ জানতে পারেনি। কিন্তু তাঁর পকেট থেকে যে ভোটার কার্ড পাওয়া গিয়েছিল, সেটি ধরে খোঁজ করতে গিয়েই ঝুলির বেড়াল বেরিয়ে পড়ে। পুলিশ জানায়, ভোটার কার্ডের ছবি অস্পষ্ট। নাম দয়ালদাস মজুমদার, বাড়ি কাটোয়ার চর পাতাইহাট গ্রামে। পূর্বস্থলী থানা থেকে সেই ঠিকানায় খবর দেওয়া হয়। ময়না-তদন্তের জন্য দেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রবিবার রুইদাস মজুমদার নামে এক জন জানান, তিনি দয়ালদাসের দাদা। মৃতদেহ তাঁকে নিয়ে যেতে দেওয়া হোক। কিন্তু মৃত যুবক যে তারই ভাই, নিশ্চিত হতে পুলিশ প্রমাণপত্র চাইলে সে তা দিতে পারেনি। উল্টে দেহ পেতে জোরাজুরি করতে থাকে। সন্দেহ হওয়ায় সোমবার তাকে ফের দেখা করতে বলে পুলিশ। |
পূর্বস্থলী থানা সূত্রে খবর, রুইদাসকে অনুসরণ করে চর পাতাইহাটে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে গ্রামের কয়েক জনকে মৃতের ছবি দেখালে সকলেই বলেন, দেহটি দয়ালদাসের নয়। প্রতিবেশীরা জানান, দয়ালদাস গাড়ি চুরি, চাকরি দেওয়ার নামে মোটা টাকা হাতানো-সহ নানা দুষ্কর্মে অভিযুক্ত ও আট মাস এলাকাছাড়া। এর পরে পুলিশ রুইদাসকে জেরা করে। পুলিশের দাবি, মৃত যুবক তার ভাই নয় বলে জেরায় সে স্বীকার করে। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে খুন ও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার মামলা রুজু করা হয়েছে। কালনা আদালতের বিচারক তাকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
তদন্তে জানা গিয়েছে, দয়ালদাস যাঁদের টাকা হাতিয়ে বেপাত্তা, সেই পাওনাদারদের তাগাদায় ব্যতিব্যস্ত হচ্ছিলেন বাড়ির লোকজন। পুলিশের দাবি, এই পরিস্থিতিতে অন্য কোনও মৃতদেহের পোশাকে নিজের ভোটার কার্ড গুঁজে দেওয়ার ছক কষে দয়াল। তাদের মা গীতাদেবী ও বিধবা বৌদিও ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন। রুইদাস ধরা পড়লেও বাড়ির বাকি লোকজন পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে। |