এক ঝলকে...
পৃথিবী
তেলের পাইপ লাগল ব’লে
• ইসলামাবাদ • দুটো দেশ এমন ভাবে জুড়ে আছে যে মনে হয় ইংরেজি অক্ষর ‘U’, নীচের দিকটা দুই দেশ একেবারে পাশাপাশি পাকিস্তান আর ইরান। আর, U-এর উপরের দিকে মাঝখানে ঢুকে বসে আছে অন্য এক দেশ: আফগানিস্তান। এখন দুই প্রতিবেশী ঠিক করেছে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে খনিজ তেল আনা হবে পাইপলাইনের মাধ্যমে। তা, পাইপলাইন যদি আনতেই হয়, তা হলে তো দুই দেশ যে জায়গায় জুড়ে আছে, সেখান থেকে লাইন টানাই বুদ্ধির কাজ। সুতরাং মহাসমারোহে শুরু হল পাইপলাইনের কাজ, ৭৮০ কি.মি. লম্বা লাইন যাবে দক্ষিণ ইরান থেকে দক্ষিণ পাকিস্তানের নবাবশাহে। পাক প্রেসিডেন্ট জারদারি আর ইরানি প্রেসিডেন্ট আহমদিনেজাদ দু’জনেই তড়িঘড়ি চলে গেলেন অকুস্থলে, মহোৎসাহে হাত ধরাধরি করে ক্যামেরা সামনে উঁচিয়ে ধরলেন “ভি” ফর ভিকট্রি!
ইরান থেকে গ্যাস পাইপলাইন তৈরি করার এই পরিকল্পনার শুরু ১৯৯৪ সালে, তখন ভারতই ছিল এই পরিকল্পনার মূল হোতা। ক্রমে ভারত সরে এসেছে, মার্কিন দেশের সঙ্গে বোঝাপড়ার কারণে ইরানি গ্যাসের মায়া ত্যাগ করেছে। পাকিস্তান স্বভাবতই উল্লসিত, পেট্রোলিয়াম-সংকটের সুরাহা মেলায়। ইরানও খুশি, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপ থেকে তাদের কিছুটা মুক্তি মিলবে পাকিস্তানে তেল ও গ্যাস বিক্রি করলে! তবে, ওয়াশিংটনের মুখ বিরাট হাঁড়ি। তাদের ইরানকে পরমাণু প্রশ্নে চাপে রাখার চেষ্টা এতে মুখ থুবড়ে পড়তে চলেছে। এ দিকে পাকিস্তানকে বকাবকি করে ‘পথে আনা’ও সহজ কাজ না, তারা বিলক্ষণ জানে! এই মুহূর্তে হয়তো নাক গলিয়ে মার্কিন প্রশাসন নাকের অপব্যবহার করবে না। কিন্তু পাইপলাইন এক বার তৈরি হয়ে সত্যিই গ্যাস আসতে শুরু করলে তাদের কোনও-একটা কড়া পদক্ষেপ নিতেই হবে, হয় ইরানের বিরুদ্ধে, নয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তত দিন পর্যন্ত, আমেরিকা-ভারতকে দেখিয়ে দেখিয়ে ইরান-পাকিস্তান খোঁড়াখুঁড়ি চালিয়ে যাক!

হার ম্যাজেস্টি-র জয়
• ফকল্যান্ড • জর্ডনে মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়লেন সুলেমান আবু ঘাইথ। আল কায়দার উচুঁ দরের নেতা, এবং ওসামা বিন লাদেনের জামাই। আদতে কুয়েতের নাগরিক এই উগ্রপন্থীর আসল নাম কী, জানা যায়নি। ৯/১১-র হামলার পর আল কায়দার ভিডিয়ো-বার্তায় নিয়মিত দেখা যেত তাঁকে। আল কায়দার যে সন্ত্রাসীরা ১৯৯০-এর দশক থেকে সক্রিয় ছিলেন, এবং এত দিন লুকিয়ে ছিলেন, এমন অতি-সংখ্যালঘুদের অন্যতম আবু ঘাইথ।
আর্জেন্টিনা থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে, দক্ষিণ মহাসাগরের বুকে, কয়েকটি বেচারা দ্বীপ! নাম তাদের ফকল্যান্ড আইল্যান্ডস। বেচারা হলে কী হবে, সিংহের রোয়াব! ভোটে জানিয়ে দিয়েছে: প্রাণ থাকতে আর্জেন্টিনার সঙ্গে থাকব না আমরা, ব্রিটেনই আমাদের অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ! ১৫১৭টি ভোটের মধ্যে ১৫১৩টি ভোটের রায়ে ফকল্যান্ড আইল্যান্ডস ব্রিটেনের অংশ হিসেবেই রয়ে গেল। আর্জেন্টিনার ভাগে বুড়ো আঙুল।
এই ফকল্যান্ড নিয়ে আর্জেন্টিনা-ব্রিটেনের মারপিট বহু দিনের। ব্রিটেন দক্ষিণ গোলার্ধের বহু দূরের এই দ্বীপপুঞ্জের অধিকার নেওয়ার পর থেকেই আর্জেন্টিনার মেজাজ খারাপ। মাঝে মধ্যেই সে নিজের পাড়াতুতো মস্তানি দিয়ে দ্বীপ দখলের চেষ্টা করে। ফকল্যান্ডীয়রা কিন্তু সার কথা বুঝেছেন: পাড়ার গুণ্ডার থেকে বেপাড়ার গুণ্ডাই ভাল। উত্তর-ঔপনিবেশিক পরাধীনতার চেয়ে হার ম্যাজেস্টি-র ঔপনিবেশিক পরাধীনতাই ঢের সুখের।

নজরবন্দি
পরিবারতন্ত্র শুধু ভারতীয় উপমহাদেশে, কে বলল? চিনের নতুন প্রিমিয়ার শি জিনপিং-এর বাবা শি জংজুন এক সময় দেশের ভাইস-প্রিমিয়ার ছিলেন। শুধু সেই জন্যই আজ তিনি দেশের শীর্ষপদে, তা নয়, তবে তাঁর উত্থানের পিছনে পিতৃপরিচয়ের প্রভাব নেই, এটা বলাও বাড়াবাড়ি হবে। একটা কথা ঠিক। যে চিনে জিনপিং-এর বেড়ে ওঠা আর যে চিনের তিনি প্রেসিডেন্ট হলেন, দুইয়ের মধ্যে বিরাট ফারাক। পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বন্যা এই মুহূর্তে: কারও বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ, কেউ ফেঁসেছেন খুনের মামলায়। সদ্যপ্রাক্তন প্রিমিয়ার ওয়েন জিয়াবাওয়ের বিরুদ্ধেই ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। একই অভিযোগ জিনপিংয়ের বিরুদ্ধেও। দেশের লোক নাকি ক্ষেপে আগুন। আর আশ্চর্য, দেশের লোকের ক্ষোভে পার্টি-নেতৃত্বও নাকি উদ্বিগ্ন। হল কী? কমিউনিস্ট পার্টির কত দুরবস্থা হলে পার্টি মানুষকে নিয়ে মাথা ঘামাতে বসে?
কাজেই, ক্ষমতায় এসেই জিনপিং সব বৈপ্লবিক কথা বলতে আরম্ভ করেছেন। ক্ষমতায় এসেই দেশের আটটি অ-কমিউনিস্ট পার্টির (হুঁ, এই আটটি দলকে চিনে থাকার অনুমতি দিয়েছে পার্টি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। সেখানেই এক বহু পুরনো গল্প তুলে আনলেন। ১৯৪৫ সালে মাও জে দং এবং চিনের চায়না ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনস্ট্রাকশন অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা হুয়াং ইয়ানপেই-এর সাক্ষাৎকারের গল্প। ইয়ানপেই বলেছিলেন, চিনের ইতিহাসে কিন্তু বারে বারেই সাম্রাজ্যের উত্থান এবং পতন ঘটেছে। মাও-এর উত্তর ছিল: আমরা সেই বিপদে পড়ব না, আমাদের কাছে গণতন্ত্র আছে। প্রিমিয়ারের মুখে গণতন্ত্রের উল্লেখ শুনে সবাই নিশ্চয়ই বিষম-টিসম খেয়ে একাকার। জিনপিং অবশ্য এখানেই থামেননি। বলেছেন, এই কথা যদি আমরা ভুলে যাই, যদি পার্টির ভেতরের পচন ঠেকাতে না পারি, বিপদ আসছে।
শেষ পর্যন্ত চিনা কমিউনিস্ট পার্টি-কেও শুদ্ধিকরণ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে? দিনকাল তবে কেবল বুদ্ধদেব-বিমান-প্রকাশদের জন্যই খারাপ নয়!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.