নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
ছাত্র পরিষদের শহর কমিটির প্রাক্তন সভাপতি, যুব কংগ্রেস কর্মী রাজা দত্ত খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ দুই যুবককে ধরেছে। বৃহস্পতিবার রাতে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ওই দু’জনকে ধরে। ধৃতদের নাম বিশ্বজিৎ ধর ও সুজন দাস। বিশ্বজিতের বাড়ি কোচবিহার শহরের নেতাজি মোড় এলাকায়। সুজন কোতোয়ালির ডোডেয়ারহাটের বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ব্যায়ামগার সংক্রান্ত বিবাদে পরিকল্পিত ভাবে ওই দুই যুবক চিলাপাতায় নিয়ে রাজাবাবুকে খুন করে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “ধৃতরা মদ খাওয়ানোর টোপ দিয়ে রাজা দত্তকে চিলাপাতায় নিয়ে যায়। সেখানে খুন করে। ব্যায়ামগার সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে।” ধৃতদের মধ্যে বিশ্বজিৎ সুভাষপল্লির ব্যায়ামগারের মালিক। সুজন সেখানে দেখাশোনার দায়িত্বে। ব্যায়ামাগারের প্রশিক্ষক ছিলেন রাজা দত্ত। সেই সূত্রে তাঁদের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তদন্তে পুলিশ জেনেছে ব্যায়ামাগারটি দু’মাস আগে চালু হয়। প্রশিক্ষক হিসাবে বেতন না নিলেও ইদানীং তিনি টাকা দাবি করেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ওজন বাড়াতে ওষুধ ব্যবহার নিয়ে রাজাবাবুর আপত্তি ছিল। ধৃতরা ওই ওষুধ বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ। ওই কারণে প্রশিক্ষক রোষের মুখে পড়েন। এক দিকে ওজন বৃদ্ধির ওষুধের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে রোজগার কমবে। অন্য দিকে প্রশিক্ষকের চাহিদা মেটানোর জেরে আর্থিক ক্ষতিও বাড়ছিল। সম্ভবত ওই কারণে রাজাবাবুকে খুনের ছক কষে দু’জন। সেই মতো চিলাপাতার জঙ্গলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। মদ খাওয়ানোর পরে লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া বড় দা দিয়ে কোপানো হয় রাজাকে। গত ৬ মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিলেন রাজাবাবু। বাড়ির লোকজন ৮ মার্চ কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজের নালিশ জানাতে গেলে সন্দেহ এড়াতে সঙ্গে যান ব্যায়ামগারের মালিক বিশ্বজিৎ। আগের দিন পুলিশ চিলাপাতার জঙ্গল থেকে অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের মুন্ডু কাটা দেহ উদ্ধার করে। আলিপুরদুয়ার থানায় দেহ শনাক্ত হয় ৮ মার্চ রাতে। ওই ঘটনায় ছাত্র পরিষদ ও বাসিন্দারা খুনে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার ও মঙ্গলবার মিছিল করেন। হাজির ছিলেন বিশ্বজিৎও। কিন্তু ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ মৃতের কললিস্ট , ঘনিষ্ঠদের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন তথ্য যাচাই করে জানতে পারে ঘটনার দিন রাজাবাবুর সঙ্গেই ছিলেন ধৃতেরা। |