|
|
|
|
জানলা গলে কার্নিশে, হইচই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শৌচাগারের জানলা দিয়ে বেরিয়ে তিন তলার জানালার কার্নিশে দাঁড়িয়ে ঝাঁপ দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন এক ২৫ বছর বয়সী যুবক। শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ জেলা হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে। ওই যুবকের হুমকি শুনে হাসপাতালে হইচই পড়ে যায়। সেই সময়ে বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। সকলেই চিৎকার শুরু করেন। দমকল, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ যায়। জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে স্বাস্থ্য কর্মীরা ওই যুবকের পা বেঁধে ফেলেন। চার জন দমকলকর্মী মই লাগিয়ে কার্নিশের কাছে পৌঁছে যুবককে ধরে ফেলেন। পরে তাঁকে নীচে নামানো হয়। হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রের খবর, নেপালি-ভাষী ওই যুবকের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি। তাঁকে কে বা কারা অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে গিয়েছেন তা হাসপাতাল জানাতে পারেনি। দার্জিলিঙের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিক বলেন, “কে বা কারা রোগীকে ভর্তি করছে তা জানা বাধ্যতামূলক। কেন নিয়ম মানা হয়নি তা খোঁজ নেব।” |
|
রোগীকে নামানোর প্রক্রিয়া চলছে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
হাসাপাতাল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই যুবককে ভর্তি করানো হয়। এ দিন সকালে খাবার খেয়ে বেলা পৌনে ১১ টা নাগাদ রোগী শৌচাগারে যেতে চায়। এর পরেই যুবক লাফঝাঁপ শুরু করে। তাঁকে ধরে শৌচাগারে নেওয়া হলে ভিতরে ঢুকে তিনি দরজা বন্ধ করে দেন। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের নিরাপত্তা কর্মী অজয় মার্ডিরা গিয়ে দেখেন যুবক দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। ধাক্কাধাক্কি করে ছিটকানি ভেঙে দরজা খুলতে সমর্থ হন। ঘটনা শুনে লিফটম্যান গোপাল দাস ওয়ার্ডে ঢুকে শৌচাগারে যান। যুবক ততক্ষণে জানলার গ্রিলের ফাঁকা অংশ দিয়ে বেরিয়ে কার্নিশে চলে গিয়েছে। ভেন্টিলেটর দিয়ে হাত বাড়িয়ে পা টেনে ধরে রাখেন গোপালবাবু। পরে স্বাস্থ্য কর্মীরা গজ, ব্যান্ডেজ দিয়ে তার পা ভেন্টিলেটরের গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে দেন। যুবক যাঁর অধীনে চিকিৎসাধীন, সেই চিকিৎসক শীর্ষেন্দু পাল জানান, যুবকটি এনসেফালাইটিস বা সেপ্টিসেমিয়ায় অসুস্থ বলে তাঁর অনুমান। সেই মতো ওষুধ এবং বিভিন্ন পরীক্ষা করতে বলে দিয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সে শয্যায় প্রস্রাব করলে নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর পোশাক বদলে দিতে গেলে ওই যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ওয়ার্ডে থাকা গজ ব্যান্ডেজ দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করে। নার্সরা ভয় পেয়ে খবর দিলে চিকিৎসক এসে দেখে যান। মানসিক অসুস্থতার জন্য ইঞ্জেকশনও লিখে দিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসক। সেই ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়নি। এর পরে তাঁর হাত পা শয্যার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। এ দিন সকালে শৌচাগারে যেতে চাইলে ওই যুবকের বাঁধন খোলা হয়। রোগীর পরিস্থিতি জানার পরও এ দিন শৌচাগারে যেতে চাইলে সেই সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন তা নিয়ে হাসপাতাল সদুত্তর দিতে পারেনি। এর আগেও জেলা হাসপাতালের শৌচাগারে পড়ে গিয়ে শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বাড়ির পাহারাদারের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র। নজরদারির হাল কতটা ফিরেছে তা ফের এ দিন স্পষ্ট হয়েছে বলে বাসিন্দাদের অনেকেই মনে করছেন। |
|
|
|
|
|