অসমের পথে ২ ব্যবসায়ী নিখোঁজ, সন্দেহ অপহরণ |
বরাত পাওয়ার আশায় অসমে যাচ্ছেন বলে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন দুই ব্যবসায়ী। কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী তাঁদের অপহরণ করেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে শুক্রবার শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন আত্মীয়েরা।
পুলিশ জানায়, চল্লিশোধ্বর্র্ ওই দুই ব্যবসায়ীর নাম বিনোদ মিত্তল এবং সুরেশ অগ্রবাল। বিনোদবাবুর বাড়ি চার্চ রোডে এবং তাঁর আত্মীয় সুরেশবাবুর বাড়ি সেবক রোডে। তাঁরা অসমে শিক্ষা দফতরে শিক্ষাসামগ্রী সরবরাহের ব্যবসা করেন।
ঘটনার তদন্তে এ দিন শিলিগুড়ি থানায় যান সিআইডি-র উত্তরবঙ্গের স্পেশাল সুপার মিরাজ খালিদ। তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। তবে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “ব্যবসার কাজে ওই দুই ব্যবসায়ী অসমে যাচ্ছিলেন। কোচবিহার পর্যন্ত মোবাইল ফোনে পরিবারের সদস্যেরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী তাঁদের অপহরণ করেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে। সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছি।” শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আইজি (বড়োল্যান্ড স্বায়ত্তশাসিত জেলা) জি পি সিংহ বলেন, “আমরা তদন্ত শুরু করেছি।” ঘটনার পিছনে বড়ো জঙ্গিদের হাত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না অসম পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহ ধরে বিনোদবাবুর মোবাইলে কোকরাঝাড় জেলার গোঁসাইগাঁওয়ের বিপিএফ বিধায়ক মাঝেন্দ্র নার্জারির ব্যক্তিগত সচিব বলে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ফোন করছিলেন। শিক্ষাসামগ্রী সরবরাহের একটি বড় বরাতের ব্যাপারে বিধায়ক দেখা করতে চান দাবি করে ওই ব্যক্তি বিনোদ এবং সুরেশকে গোঁসাইগাঁওয়ে ডেকে পাঠান। বড় বরাত পাওয়া যাবে ভেবে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ব্রহ্মপুত্র মেল ধরে গোঁসাইগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা হন বিনোদ ও সুরেশ। ওঠেন এসি-৩ টায়ার কামরায়। বিনোদবাবুর ভাই বিমল মিত্তল জানান, ওই দিন দুপুর ২টো নাগাদ বিনোদ এবং সম্পর্কিত জামাইবাবু সুরেশের সঙ্গে কথা হয় তাঁদের। সে সময় ট্রেন কোচবিহারে রয়েছে বলে তাঁরা জানান। এর পর থেকে বিনোদবাবুদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি আত্মীয়-পরিজন। বিমল বলেন, “যাঁর ফোন পেয়ে দাদারা অসমের উদ্দেশে রওনা হলেন, তাঁর নম্বর বা ঠিকানা আমাদের জানা নেই। আমাদের সন্দেহ কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী ওঁদের ধরেছে।” তবে কেন তাঁদের এমন সন্দেহ হচ্ছে তা ভাঙেননি তিনি। কেউ কি মুক্তিপণ চেয়ে বা হুমকি- ফোন করেছে? বিমলের জবাব, “আমাদের কেউ ফোন করেনি।”
বিধায়ক নার্জারি বলেন, “আমি আজ সকাল অবধি গুয়াহাটিতে ছিলাম। বিকেলে গোসাইগাঁও ফিরেছি। ব্যক্তিগত ভাবে ওই ব্যবসায়ীদের চিনি না। ফোন করে ডাকানোর ব্যবস্থাও করিনি। ওঁদের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।” পুলিশ বিনোদবাবুর মোবাইল ফোনের কলরেকর্ড পরীক্ষা করতে শুরু করেছে। |