বকেয়া কর নিয়ে কড়া হবে পুরসভা |
বাজেটে ঘাটতি মেটাতে বকেয়া কর নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জলপাইগুড়ি পুরসভা। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরগুলি থেকে পুরসভার বকেয়া সম্পত্তি করের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। এই টাকা আদায় করতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে চিঠি পাঠিয়েছে পুরসভা। প্রতি বছর পুরসভার বাজেটের আগে বকেয়া কর আদায়ের চিঠি পাঠানো হয় সরকারি দফতরগুলিতে। চলতি বছরে বকেয়া করের পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা ছুঁতে চলায়, কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে পুর কতৃপুক্ষ। সম্প্রতি পুর কতৃপক্ষ বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে বকেয়া কর পরিশোধ না করলে দফতরগুলিতে পুরসভার জলের সংযোগ থাকলে তা কেটে দেওয়া হবে। কোনও ক্ষেত্রে জলের সংযোগ না থাকলে সেই দফতর থেকে ময়লা ও আবর্জনা অপসারণ বন্ধ করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “পুর এলাকায় ভবন থাকলে আইন অনুযায়ী সম্পত্তি কর বা প্রপারটি ট্যাক্স দিতে হয়। এটা পুরসভার ন্যায্য পাওনা। দেখা যাচ্ছে, কিছু সরকারি দফতর দীর্ঘদিন ধরে তাদের কর পুরসভা জমা দিচ্ছে না। প্রতি বছরই তাদের এই কর পরিশোধের চিঠি পাঠানো হয়। এ বছর তাদের কাছে পুরসভার পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে কর মিটিয়ে না দিলে আইনত পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
কেন এবছর পুর কতৃপক্ষ কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্থায়ী পুর কর্মীদের বেতন, পিএফ এবং একাংশ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পাওনা বাবদ চলতি বছরে ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা। পুরসভার নিজস্ব সূত্রে চলতি বছরে আয়ের পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ৬ লক্ষ টাকা। এই আয়ের বেশিরভাগটাই পুরসভার দৈনন্দিন খরচ এবং কর্মীদের বেতনে দিতেই শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানানো হযেছে। অস্থায়ী কর্মীদের বেতন এবং পিএফ খাতে বকেয়া ১ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা যোগাড় করতেই সরকারি দফতরের বকেয়া কর আদায় করতে পুরসভা কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুরসভার নথি অনুযায়ী রাজ্য সরকারের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর, সদর ব্লক অফিস, পূর্ত দফতর, বিদ্যুত্ পর্ষদ, সমাজকল্যাণ দফতর, এনবিএসটিসি, দমকল, জেলা নির্বাচন দফতর সহ বিভিন্ন দফতর থেকে পুরসভার বকেয়া রয়েছে। কোনও দফতরে বকেয়ার পরিমাণ ৬৬ হাজার কোথাও আবার ৫ লক্ষ। কেন্দ্রীয় সরকারের রেল ও ডাক বিভাগ থেকেও বকেয়া রয়েছে বলে পুরসভার দাবি। প্রতিটি দফতরেই চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে চিঠি পাঠিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। জলপাইগুড়ির সদর মহকুমাশাসক সাগর চক্রবর্তী বলেন, “কর বাবদ বকেয়া পুরসভার অবশ্যই প্রাপ্য। তবে আর্থিক বছরের শেষ সময়ে উদ্যোগী না হয়ে সারা বছর ধরে এই উদ্যোগ চালানো প্রয়োজন। সব দফতরগুলিকে ডেকে পুরসভা আলোচনাও করতে পারে। তবে প্রশাসনকে পুরসভা এবিষয়ে কিছু জানায়নি। আমাদের জানালে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে।”
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “প্রতিটি দফতরকেই নিয়মিত চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু তার কোনও উত্তর পুরসভার কাছে আসে না। সে কারণেই কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হবে।” |