|
|
|
|
|
|
|
সাজগোজ... |
|
সূর্যকে লাল কার্ড |
ডিজাইনারদের। গরম জব্দ করার মন্ত্র শুনলেন সুচন্দ্রা ঘটক |
রোদের তাপ বাড়ছে। চোখ আর যেতে চায় না গাঢ় কোনও রঙের দিকে।
বিয়েবাড়ির মরসুম শেষ হয়নি। তবু সিল্কের শাড়ি, ভারী কাজের জামা ইতিমধ্যেই রীতিমতো বিরক্তিকর।
প্যাচপ্যাচে গরমের দিনগুলোর সঙ্গে এ বার মোকাবিলা করা যায় একটু অন্য ভাবে। পোশাকের রং থেকে কাট সবেতেই আসতে পারে চমক। রোজের ফিটিং জিনস্টা ছেড়ে হোক না একটা সালোয়ার প্যান্ট নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট। রোববারের পুল সাইড ব্রাঞ্চে তাক লেগে যাক সে সাজ দিয়েই। সঙ্গে থাকুক গলা অথবা হাতে হাল্কা কোনও স্টেটমেন্ট জুয়েলারি। |
|
দেব-নীলের সামার ওয়্যার |
নতুন রঙের ছোঁয়া...
দিনের বেলায় কিটি পার্টিই হোক বা ক্লায়েন্ট মিটিং গ্রীষ্মকালে সব সমস্যার সমাধান সহজে হতে পারে ‘আ লিটল হোয়াইট স্কার্ট’ দিয়ে। সঙ্গে থাক একটা একই রঙের সামার জ্যাকেট। কোনও কথা হবে না, মিটিং থেকে পার্টি, সবেতেই সহজে মধ্যমণি!
গ্রীষ্মের সাজে সব সময়েই বিশেষ গুরুত্ব পায় জামার রং। তবে এর মানেই দু’একটা চিরপ্রচলিত ‘সামার কালার’য়ে আটকে রাখতে হবে না নিজেকে।
দেশজুড়ে ডিজাইনাররা আছেন তো সময়ের সঙ্গে উপযোগী সাজটা বলে দিতে। যেমন ‘দেব ও নীল’ ডিজাইনার-জুটি গরমে ‘অন্য ধরনের’ রং পরতেই সাহস দিচ্ছেন সকলকে। ফ্যাশন উইকের প্রস্তুতির চরম ব্যস্ততার ফাঁকেই জোর গলায় নীল জানিয়ে দিলেন, “এ বছর একটু নতুন রং আসুক না। একঘেয়ে সাজ ছাড়াটা দরকার তো।”
কোবাল্ট ব্লু থেকে ট্যাঞ্জারিন, হাল্কা সবুজ এমন সব চমকদার রঙেই রৌদ্রতপ্ত মরসুমটাকে সাজাতে চান ওঁরা। রোজের সাজে থাকতে পারে ফুশিয়া পিঙ্ক, পেল গ্রে, বেজ, পিচ রঙের ছোঁয়াও।
একটা ভাল রঙের পোশাকই তো করে তুলতে পারে দিনটাকে আরও চনমনে। বলছেন ডিজাইনার কিরণউত্তম ঘোষ থেকে চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরা।
গরমের প্রচলিত বেবি পিঙ্ক আর কাঁচা হলুদকেও অবশ্য অবহেলা করছেন না কেউ। নানা রঙের স্কার্ট, প্যান্ট, টপ, স্কার্ফে মিক্স এন ম্যাচ করেই সাজে আসতে পারে নতুনত্বের মেজাজ। মাঝেমধ্যে কোথাও অল্প একটু ব্রাউনের ছোঁয়াতেও খুলে যেতে পারে গ্রীষ্মের সাজ, মত শর্বরী দত্তের। রঙে বৈচিত্র যত থাকবে, মনও যে হবে ততটাই ফুরফুরে।
ফিটিংস্ নয়...
বয়ফ্রেন্ডের কোনও টি-শার্ট পছন্দ? সাইজে অনেকটা বড় বলে পরা হয়নি? এই সময়ে দিব্যি গলিয়ে নেওয়া যায় সেটা। বন্ধুরা হাসলে বলে দেওয়া যায়, ‘এ লগন ঢলঢলে জামা পরার’।
ডিজাইনারেরাও কিন্তু তেমনটাই বলছেন। ফিটিংস্ পোশাক এ সময়ের জন্য এক্কেবারে আউট ফ্যাশন। কিরণউত্তম ঘোষের এ মরসুমের জন্য বিশেষ সংযোজন সালোয়ার প্যান্ট। নানা প্যাস্টেল রঙের সুতির কাপড়ে তৈরি সরু কাটের এই প্যান্টেই তৈরি করা যায় নিজের সামার স্টেটমেন্ট। অন্য রঙের কাপড় দিয়ে হাঁটুর নীচের প্যাচ পকেটটাই বলে দেবে এ আধুনিকার ভাবনা কতটা ট্রেন্ডি!
জিন্স-টিন্স ছেড়ে অনায়াসে ঘুরে বেড়ানো যায় লুজ-ফিট কোনও ধোতি প্যান্ট বা পাতিয়ালা পরেই। আর সে সব এত দিনে একঘেয়ে লাগলে ওয়ার্ড্রোবে অবশ্যই রাখা থাক কয়েকটা ঢলঢলে পালাসোস প্যান্ট। দিব্যি স্টাইলে কেটে যাবে গ্রীষ্মকালটা। ‘ফিল-গুড’ই হল আসল ফ্যাশন। অর্থাৎ, যে পোশাকে যত আরাম, সেটাই তত ট্রেন্ডি। মত ডিজাইনারদের।
রোজ রোজ প্যান্ট-টপের সাজটাও অবশ্য মনে হতে পারে বোরিং। অথচ গত মরসুমের ড্রেসগুলো তো আবার বডি হাগিং। বিকল্প ব্যবস্থাও আছে। জানালেন ডিজাইনার চন্দ্রাণী। কোনও এক ইভনিং পার্টিতে করে ফেলা যায় এক্সপেরিমেন্টটা। পেল গ্রে বা বেজের মতো কোনও ইংলিশ রঙে কয়েক লেয়ারের একটা পা পর্যন্ত ম্যাক্সি ড্রেস বদলে ফেলতে পারে লুকটাই। মুখে হাল্কা মেক-আপ। আর গলায় থাকুক এক্কেবারে কন্টেম্পোরারি কোনও নেকপিস। পার্টিটা ইতিহাস হয়ে থাকবে! |
কিরণউত্তম ঘোষের
সারোং শাড়ি |
ওয়েদার ফ্রেন্ডলি সিল্কে তৈরি
শর্বরী দত্তর এথনিক ড্রেস |
চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরার অফ
শোল্ডার পার্টিওয়্যার |
|
পরতে হলে শাড়ি...
স্বাদ বদল হোক না সেই অতি-বাঙালি সাজেও।
হাল্কা গোলাপি বা চোখ ধাঁধানো নীল ক্রেপ-জর্জেটের উপরে সানগ্লাস, ট্যাক্সি কিংবা মাছের প্রিন্ট? বদলে যাবে শাড়িতে সাজের সংজ্ঞাটাই। অল্প অ্যাক্সেসরিজ। প্লাস্টিকের অ্যাংগ্রি বার্ড বা অন্য কোনও মোটিফ দেওয়া দুল ঝুলুক কান থেকে। কাজের ফাঁকে মুড়ি-ব্রেকে বসে টিপস্ দিলেন ডিজাইনার নীল। বাঙালি নারীর রোজের সাজের ধারণাটাই এই গ্রীষ্মে বদলে দিতে চান নাকি ওঁরা?
নীলের সপাট উত্তর, “সাজব তো আনন্দে। নতুন কিছু না করলে চলে। শাড়ি মানেই কেন বলুন তো চিরাচরিত হবে? গরমের সাজটা বেশ হাল্কা, খোলামেলা হলে মনটাও যে বেশ ব্রিজি থাকে।”
আছে আরও এক নতুন সংযোজন। সারোং শাড়ি। ‘শাড়ি কিন্তু শাড়ি নয়’ এই আধুনিক পোশাক চলছে উৎসব প্রাঙ্গণ থেকে বন্ধুদের আড্ডাতেও। বহু রঙের ব্যবহারে এই শাড়ির সাজে দেখাতে পারে বেশ ট্রেন্ডি।
আর তবুও যদি হতে হয় শাড়িতে ট্র্যাডিশনাল, তবে কিন্তু একটা ব্যাকলেস কালো চোলি মাস্ট। বিয়েবাড়ি হোক বা সেমি-অফিশিয়াল পার্টি, ওই চোলির সঙ্গে একটা হ্যান্ডলুমের শাড়িতেই মাত করে দেওয়া যায় চারপাশটা। আর যদি পিঠ বা কাঁধের এক কোণ থেকে উঁকি দেয় একটা লাল-কালো ট্যাটু এক সাজেই কেল্লাফতে!
এই ধরনের সাজের সঙ্গে একটা বড়সড় থাম্ব-রিং নজর কাড়তে পারে বেশ। টিপস্ কিরণের।
সাজবে না ছেলেরা?
তাই কখনও হয়! এত কিছুর পরে পাশের চেয়ারে বয়ফ্রেন্ডকে কি আর রোজের জিনস্-টি শার্ট মানায়?
ডিজাইনার শর্বরী দত্তের সাফ কথা, এ সময়টা কিন্তু অনুষ্ঠান বাড়িতে ছেলেদের এথ্নিক সাজেই মানায়। কটন সিল্ক থেকে তসর নানা ধরনের কাপড়ের ব্যবহারে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ঝুলের কুর্তা, বন্ধগলা, পিরান।
ছেলে মানেই যে রঙে কোনও এক্সপেরিমেন্ট চলবে না, তা কিন্তু মোটেই নয়। ডিজাইনারের বার্তা, যে কোনও প্যাস্টেল রঙে নতুন ভাবে সেজে ওঠা যায় এই মরসুমে। চলতে পারে বেজ, লেমন, ব্রাউনের মতো শেডও। জামায় প্রিন্ট নিয়েও করে ফেলা যায় এক্সপেরিমেন্ট। রোজের স্ট্রাইপ, চেক বাদ দিয়ে সাজ হতে পারে ফ্লোরাল প্রিন্টেও। আর চাই মানানসই কিছু অ্যাক্সেসরিজ।
এ সময়ের অনুষ্ঠানবাড়িতে কোনও ওয়েস্টার্ন পোশাক না পরে বেছে নেওয়া যায় ধুতিও। আরামও হবে, তেমন থাকবে নিজস্ব একটা স্টাইল স্টেটমেন্ট। |
|
|
|
|
|